মাদারীপুর প্রতিনিধিঃ
মাদারীপুরে আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদারকে প্রকাশ্যে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা মামলার ২০ বছর পর তিনজন আসামীকে মৃত্যুদন্ড, ৬ জনকে যাবজ্জীবন ও দোষ প্রমান না হওয়ায় ৫ জনকে খালাস দিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক লায়লাতুল ফেরদৌস।
বুধবার(১৯ অক্টোবর) বিকেলে মাদারীপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক লায়লাতুল ফেরদৌস এ মামলার রায় দেন। এসময় অপরাধ প্রমানিত না হওয়ায় হত্যা মামলায় ৫ জন আসামীকে খালাস প্রদান করা হয়েছে। সাথে যাবজ্জীবন ৬ আসামীকে ৫০ হাজার করে অর্থদন্ডে দন্ডিত করা হয়।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তরা হলো, মাজারুল ইসলাম মজনু( ৫০), মাছিম শেখ (৪৮), জসিম শেখ (৪৫)। যাবজ্জীবনপ্রাপ্তরা হলো, হোসেন হাওলাদার (৬০), মনজুর আলী (৫৬), সাইদুর হোসেন হাওলাদার (৫২), সূর্য মাতুব্বর (৫৫), ফয়েজ শেখ (৫৮), সুজাল মাতুব্বর (৬০)।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০৩ সালের ১৯ অক্টোবর মাদারীপুর সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের পুরাতন রাজার হাট বাজারে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শিরখাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান হাওলাদারের মেজো ভাই রাজ্জাক হাওলাদারকে প্রকাশ্যে দিবালোকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ লুৎফর খালাসী ও তার সমর্থকরা। এ ঘটনার ২০ অক্টোবর নিহতের স্ত্রী সেলিনা খানম বাদী হয়ে ২০ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। পরবর্তীতে এ ঘটনায় গত ২০০৫ সালের ৩ নভেম্বর মাদারীপুর সহকারী পুলিশ সুপার ( সদর সার্কেল) মিজানুর রহমান ১৯ জনকে আসামী করে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করে। পরে বাদীপক্ষ মামলায় নারাজি দিলে আরো ১ জনকে আসামী অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পরবর্তীতে আদালত আরো তিন আসামীকে অন্তর্ভুক্ত করে বিচারকাজ শুরু করেন। এসময় বিচারকাজ চলাকালে ৫ জন আসামী বন্দুকযুদ্ধে মারা যায় এবং আরো ৪ আসামী স্বাভাবিক মৃত্যুবরন করে। দীর্ঘ ১৯ বছর বিচারিক কার্যক্রম শেষে আজ রাজ্জাক হত্যা মামলার রায় দেয় আদালত।
মামলার বাদী সেলিনা খানম বলেন, ‘আজকের রায়ে আমরা খুশি। এই রায় যেন উচ্চ আদালত বলবৎ রাখে এবং দ্রুত এই রায় কার্যকর করে।’
মাদারীপুর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. সিদ্দিকুর রহমান সিং বলেন, ‘রাজ্জাক হাওলাদার হত্যা মামলায় দীর্ঘ ১৯ বছর যুক্তিতর্ক শেষে আদালত এই মামলার ৩ জনের ফাসি, ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দেয়। আমরা রাষ্ট্রপক্ষ এ রায়ে সন্তুষ্ট।’
Leave a Reply