শিবচরনিউজ২৪ডেস্কঃ
বাংলা নববর্ষের বাকি আর কয়েকদিন। নববর্ষকে ঘিরে পুরো মাস জুড়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় আয়োজন করা হয় বৈশাখী মেলা। এ সময় মৃৎশিল্পীরা কিছু বাড়তি আয় করেন। বৈশাখী মেলাকে সামনে রেখে বিভিন্ন স্থান থেকে ঋণ নিয়ে দেশের অন্যান্য জায়গার মত মাদারীপুরেও খেলনাসহ বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী তৈরি করেছেন মৃৎশিল্পীরা। এসময় মাটির তৈজসপত্র পুড়িয়ে রং দেয়ার ব্যাস্ত থাকার কথা সেখানে খাবার তৈরি চুলাই আগুন দিতেই কস্ট হচ্ছে তাদের। এই মহামারি সময় যাতে তাদের দুমুটো খাবারের ব্যবস্থা করে সরকার এমনটাই দাবী মৃৎশিল্পী ও পাল সম্প্রদায়ের।।
বাঙ্গালী জাতির অন্যতম ঐতিহ্য মৃৎ শিল্প। এই শিল্পের চাহিদা বছরের অন্যসব সময়ে না থাকলেও পহেলা বৈশাখে মাটির তৈরি জিনিসপত্র ছাড়া যে চলেই না। পহেলা বৈশাখকে ঘিরে মাদারীপুরের বিভিন্ন স্থানে বৈশাখী মেলার আয়োজন করা করা হতো। মেলার চাহিদা মেটাতে ও মাটির তৈরি জিনিসপত্র বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত করতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে দিন-রাত ব্যস্ত সময় কাটাতে হতো শিবচর উপজেলার ভদ্রাসন পালপাড়ার মৃৎশিল্পীদের। কিন্ত এবার করোনা ভাইরাসের কারনে তার পুরোটাই উল্টো হয়েছে। নেই মনের মাধুরী মিশিয়ে মাটির তৈরি খেলনার আকৃতি দেয়ার ব্যস্থতা। কর্মহীন অসহায় দিন পার করছে মৃৎশিল্পীরা।
রবিবার (১২এপ্রিল) দুপুরে সরেজমিনে শিবচর উপজেলার ভদ্রাসন এলাকায় গিয়ে জানা যায়, এ এলাকায় ২ টি গ্রামে প্রায় দেড় শতাধিক লোক এ পেশার সাথে জড়িত।মৃৎশিল্পীরা প্রতিবছর বাংলা বছরের বৈশাখ আসার অপেক্ষায় একটু ভাল থাকার জন্য বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে তৈরি করেছিলেন বিভিন্ন খেলনা। কেউ মাটি গুঁড়া করে কাদা করছেন, কেউ মাটি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের হাঁড়ি-পাতিল তৈরি করছেন, কেউবা বিভিন্ন পশুপাখির আকৃতি তৈরিতে করে রেখেছে কিন্ত করোন ভাইরাসের প্রভাবের কারনে গত ২৬ মার্চ থেকে ২৫ এপ্রিল সরকার সাধারন ছুটি ও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে লোক সমাগম বন্ধ রেখেছে। এর কারনে মেলায় বন্ধ থাকবে। তাই মাটির তৈরি জিনিসপত্রে রং-তুলি দিয়ে হরেক রকমের নকশা করার নেই ব্যস্ততা। অনেকে তৈরি পণ্যগুলো রোদে শুকাচ্ছেন। কিন্তু পুড়িয়ে যে সেটা মেলার জন্য তৈরী করবে সেই প্রস্তুতি নেই। তাছাড়া তাদের খাবার রান্না করার চুলাতে আগুন দিতেই কস্ট হচ্ছে। বেকার সময় পাড় করছে এ মৃৎশিল্পী পরিবারের সদস্যরা।
রঙ্গেস্বর পাল নামের এক মৃৎ শিল্পীরা বলছেন,আমরা একটি বছর অপেক্ষায় থাকি বৈশাখ মাসের, কিন্ত মহামারি কারনে সরকার যে সিদ্বান্ত নিয়েছে এটা আমাদের সবার ভালোর জন্য কিন্তু আমাদের যে ঋন রয়েছে এবং দৈনিক খাবার খেতে হয় সেটা পাবো কোথায়? আমাদের সহযোগীতা করলে হয়তো দুমুটো খেয়ে বেচে থাকতে পারবো।
গোকুল পাল নামের আরএক মৃৎ শিল্পীরা বলছেন করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে বাংলা নববর্ষসহ সব ধরনের উৎসব বন্ধ হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তারা। এখন খেলনা সামগ্রী বিক্রি করতে না পারলে আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়বে তারা।
অন্যায় ও দূর্নীতির বিরুদ্ধে শিবচরনিউজ২৪.কমকে খবর দিয়ে সেবা নিন।
Leave a Reply