কালকিনি করেসপন্ডেন্টঃ
কালকিনিতে পৌর নির্বাচনী মাঠ থেকে পুলিশের গাড়িতে তুলে নেয়ার পর নিখোঁজ রয়েছে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মশিউর রহমান সবুজ। পুলিশ সুপারের গাড়িটি বাংলাবাজার ঘাট থেকে শিমুলিয়ায় ফেরিতে পার হওয়ার সময় তার দেখা মিললেও পুলিশ সুপার বিষয়টি ব্যক্তিগত বলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ওই সময় ফেরিতেই পুলিশ সুপারের গাড়িতে নিখোঁজ প্রার্থী ছিল বলে মুঠোফোনে দাবি করেন প্রার্থী।
এদিকে প্রার্থী নিখোঁজের পরই এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ নিয়ে কালকিনি থানা ঘেরাও করে স্বতন্ত্র প্রার্থী সবুজের সমর্থকরা। নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর স্বজন ও সমর্থকরা জানায়, শনিবার দুপুরে কালকিনি পৌর এলাকার পালপাড়ায় নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছিলেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মশিউর রহমান সবুজ। এসময় তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে একটি কল আসে। তাৎক্ষণিক সেখানে কালকিনি থানার অফিসার ইনচার্জ মো. নাসির উদ্দিন মৃধা গাড়ি নিয়ে হাজির হন। পরে সেখান থেকে সবুজকে পুলিশের গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর পরই নিখোঁজ হয় সবুজ। এরই প্রতিবাদে বিক্ষোভ করে কালকিনি থানা ঘেরাও করে সবুজের সমর্থকরা। এসময় তারা টায়ার জ্বালিয়ে স্লোগান দেন।
এসময় কালকিনি-ভুরঘাটা ও কালকিনি-মাদারীপুর আঞ্চলিক সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে বিকেলে সাংবাদিকরা বাংলাবাজার ঘাট থেকে শিমুলিয়া ঘাটে রওনা দেয়া ফেরি ক্যামেলিয়ায় হাজির হন। ফেরিটির ভিআইপি কেবিনে উপস্থিত পুলিশ সুপার মো. মাহবুব হাসান বিষয়টিকে ব্যক্তিগত বলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
ফেরিটি শিমুলিয়া ঘাটে পৌঁছালে পুলিশ সুপারের গাড়ির ডান পাশ দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী মশিউর রহমান সবুজকে গাড়িতে উঠতে দেখা যায়। পরবর্তীতে মুঠোফোনে সবুজ পুলিশ সুপারের সাথে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এদিকে থানার সামনে সবুজকে মুক্ত করার বিক্ষোভ মিছিলে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে হামলা চালায় নৌকার সমর্থকরা। পরে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে আহত হয় অন্তত ২০ জন। ভাঙচুর করা হয় বেশকিছু দোকানপাট। পরে পুলিশ সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে সবুজকে তুলে নিয়ে যাবার বিষয়ে অস্বীকার করেছে পুলিশ। উল্লেখ্য, আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি কালকিনি পৌরসভা নির্বাচন।
সন্ধ্যায় মুঠোফোনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মশিউর রহমান সবুজ বলেন, আমি ক্যামেলিয়া ফেরির ভিআইপি কেবিনে পুলিশ সুপারের সাথেই ছিলাম। ফেরি শিমুলিয়া ঘাটে ভিড়লে কেবিন থেকে নামিয়ে পুলিশ সুপারের গাড়ির ডান দিক দিয়ে ওঠানো হয়। আমি এখনও পুলিশ সুপারের সাথেই আছি।
মাদারীপুর পুলিশ সুপার মো. মাহবুব হাসান তার সাথে ভিআইপি কেবিনে থাকা ব্যক্তির সাথে কথা বলতে সাংবাদিকদের নিরুৎসাহিত করেন। ওই ব্যক্তি প্রার্থী কিনা জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
এক প্রশ্নের উত্তরে পুলিশ সুপার বলেন, যা হচ্ছে নিজে থেকেই হচ্ছে (উইলিং লি)। কাউকে কোন কিছু জোর করে করা হচ্ছে না। আপনাদের সাথে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভালো। এটি সংবাদ করার মতো কোন বিষয় না। প্রার্থী তো কোন অভিযোগ করেননি।
তিনি বলেন, তার পরিবারেরও কোন অভিযোগ নেই এবং এলাকায় আন্দোলনের কথা বললেও তা থেমে গেছে। আপনারা খোঁজ নিয়ে দেখেন। প্রার্থীকে সামনে আনার কথা বললে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন
Editor In Chief : Md.Rafiqul Islam Raza
Sub-Editor : Abu Saleh Mussa
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply