স্বাস্থ্য বাতায়ন,শিবচরনিউজ২৪.কমঃ
বাস্তবে রোজার সাথে করোনা ভাইরাসের খুব বেশী সম্পর্ক না থাকলেও,অতীব জরুরী তেমন কিছু করনীয় নেই বটেও কয়েকটি বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন জরুরী।রোজায় যেহেতু সরকারী নির্দেশে রেস্টুরেন্ট খুলে দিয়েছে,সেহেতু অতিউৎসাহী বা অতিধার্মিকতা প্রমাণ করতে গিয়ে ইফতারী সামগ্রী কেনার সময় নিজেদের শারীরিক দুরত্ব বজায় রাখায় মনোযোগ দেওয়া দরকার।
সাধারনত রোজা রাখার ক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত বয়োজেষ্ঠরা এগিয়ে,তাই তাদের ক্ষেত্রে দৃষ্টি রাখতে হবে পরিবারের অন্যসব সদস্যদের।করোনা ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যাও বেশী এই মুরব্বীদের,এজন্য উনাদের প্রতিটি ভালনারেবল কাজে খেয়াল রাখতে হবে।গোসলের সময় পানি গরম করে দেয়া,খাবার পানিটা যাতে স্বাভাবিক তাপমাত্রার থাকে-বেশি ঠান্ডা যাতে না হয়,খাবার-দাবার হালকা গরম করে খাবে,তাজা ও সদ্য রান্না করা খাবার খাবে,বাসী খাবার খাবে না ইত্যাদি।উক্ত বিষয়গুলো বয়োজেষ্ঠরা সহ সকলেই পালন করলে রোজায় স্বাভাবিক সুস্থ্য থাকা যাবে এবং করোনা ভাইরাস ও আক্রমন থেকে দূরে থাকবে।
করোনাকাল যেহেতু লকডাউনের কাল,ঘরে থাকার কাল,বাচ্চাদের স্কুল ও বন্ধ তাই এই সময়টায় পরিবারের সবাইআমরা বাসায় অবস্থান করছি,কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশন ছাড়া বয়সীরা কিছু কারনে কিছু সময়ের জন্য হলেও ঘরের বাইরে যাচ্ছি কিন্ত বাচ্চারা তাদের স্কুল বন্ধ হবার পর থেকেই ঘরে আটকে আছে,এটা অত্যন্ত বেদনাদায়ক-ওরা বাইরে যেতে বেশী পছন্দ করে।রোজার এই সপ্তম দিনে ওদের মার্কেটিং ও হয়তো কম্প্লিট হতো!তাই ওরা মানসিকভাবে যাতে বিপর্যস্ত না হয় পরিবারের সবাই মিলে সেটার প্রতি সজাগ দৃষ্টি দিতে হবে।বড়দের সাথে যতটুকু সম্ভব সকল কাজে সকল বিষয়ে বাচ্চাদের সংশ্লিষ্ট রাখতে হবে।ওদের সাথে একই সুরে তাল মিলিয়ে খেলতে হবে,গাইতে হবে।মনে রাখতে হবে বাচ্চা-বয়ষ্কো প্রায় সমান।
পূর্ণবয়স্ক ও মাঝবয়সীদের মধ্যে যাদের হাইপারটেনশন,ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য রোগ আছে,করোনা এড়াতে তাদের বিশেষ সতর্কতায় থাকতে হবে।সকল ক্ষেত্রেই প্রেসারের রোগীরা যারা ওষুধ খাচ্ছেন এবং একবেলা তারা রোজার সময় রোজা রাখলে ইফতারীর পরপর ওষুধটা খাবেন।একবেলা যারা প্রেসারের ঔষুধ খান তারা কখনোই এটা ভোর রাতে খাবেন না।বেশীরভাগ ডায়াবেটিকস ওষুধ খাবার আগে খেতে হয় কিন্ত রোজা থাকলে ইফতারীর আগে সেটা সম্ভব নয় বলেই আপনি ইফতারীতে কিছু মুখে দিয়েই ওষুধটা খাবেন তারপর বাকি ইফতার সারবেন।
কোভিড-১৯ রোগী যারা শারীরিক ভাবে কম্প্লিট ফিট তারা রোজা থাকতে চাইলে থাকতে পারবেন,তবে করোনার নিয়ামাবলীও অবশ্যই পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে পালন করতে হবে।
প্রতিটি পরিবারের মহিলারা এমনিতেই লকডাউন কালে বাড়তি পরিশ্রম করছেন,পরিবারের সবাই ঘরে অবস্থান করায় তাদের উপর কাজের চাপ ও মানসিক চাপও বেশি।রোজায় পরিশ্রম আরো বেড়েছে। তাই যতখানিক সম্ভব করোনাকালের রোজায় পরিবারের সবাই মিলে একে অপরের পাশে থাকি।শুভ কামনা সবার জন্য,ভাল থাকুন,সুস্থ্য থাকুন।
লেখকঃ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক,
ওমর ফারুক লপ্তি,
ডিপিএম,আইপিএইচ্এন,স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ঢাকা।মেম্বার, সমন্বিত কোভিড-১৯ সেন্ট্রাল কন্ট্রোল রুম।
Leave a Reply