কাঁঠালবাড়ি ব্যুরোঃ
ফেরিতে প্রচণ্ড ভিড়, গরম, রোদের তাপ আর অক্সিজেনের অভাবে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে।আর বাংলাবাজার-শিমুলিয়া রুটে ফেরিতে যাত্রী মারা যাওয়ার বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের ফরিদপুর অঞ্চলের সহকারী পরিচালক নজরুল ইসলাম এমন তথ্য জানিয়েছেন।এছাড়াও গরমে, মানুষের ভিড়ে ও অক্সিজেনের ঘাটতি হওয়ায় অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
বুধবার (১২ মে) সন্ধ্যার দিকে বাংলাবাজার ঘাট এলাকায় পরিদর্শনে গিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, যে লোকগুলো ফেরিতে মারা গেছেন, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা গিয়ে তাদের উদ্ধার করেছে। একটি ফেরি থেকে চার জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
সেখানে তিনজন পুরুষ ও একজন নারী ছিলেন। এর আগেও একই কারণে শাহপরান নামের আরেকটি ফেরিতে একটি ছেলে মারা গেছে।মরদেহগুলো পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আর আহতদের উদ্বার করে উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।
বিআইডব্লিটিসির বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা গেছে, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া থেকে ছেড়ে আসা শাহ্ পরান নামে একটি ফেরি। অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে গরমে অসুস্থ হয়ে মাঝ পদ্মায় মারা যায় আনচুর মাদবর (১৫) নামে এক কিশোর। পরে দেড়টার দিকে শিমুলিয়া থেকে প্রায় তিন হাজার যাত্রী নিয়ে বাংলাবাজার ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে আসে ফেরি এনায়েতপুরী। অতিরিক্ত যাত্রী বহনের কারণে ওই ফেরিতে গাদাগাদির সৃষ্টি হয়। এসময় যাত্রীদের চাপে ও হিটস্ট্রোকে মারা যায় আরও চার জন। এ সময় আহত হয় অন্তত ২০ জন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা আহতদের মধ্যে ১২ জনকে উদ্ধার করে কাঁঠালবাড়িতে অস্থায়ী ক্যাম্প করে চিকিৎসা দেয়। এছাড়া তিন জনকে গুরুতর অবস্থায় শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।এছাড়াও বাকিদের স্থানীয় পাঁচ্চর রয়েল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শশাঙ্ক ঘোষ বলেন, একসঙ্গে অনেকক্ষণ রোদে দাঁড়িয়ে থাকা ও অতিরিক্ত যাত্রীর চাপাচাপির কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
নিহত পাঁচ জনের মধ্যে তিন জনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন- শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার কলিকাপ্রসাদ এলাকার মো. গিয়াস উদ্দিনের ছেলে মো. আনচুর মাতুব্বর (১৫), মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার আলামীন ব্যাপারীর স্ত্রী নিপা বেগম (৪৫) ও বরিশালের মুলাদি উপজেলার চরকালিখান এলাকার এছাহাক আকনের ছেলে নরুদ্দিন আকন (৪৬)।
শিবচর ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ,শ্যামল বিশ্বাস (রাত ১১ টা এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত) বলেন,” এখনো দুইটি মরদেহ ঘাটে আছে।আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে এই মাত্র কথা বলেছি।মরদেহ দুইটি এখন ঘাট এলাকা থেকে শিবচর আনা হবে।এখানে একটি ডুম ঘরে রাখা হবে’
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিরাজ হোসেন বলেন, নারীসহ পাঁচ জনের মৃত্যু গরম ও হিটস্ট্রোক থেকে হয়েছে।তিনটি মরদেহ তাদের আত্মীয় স্বজনদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে বাকি মরদেহগুলোর পরিচয় নিশ্চিতের কাজ চলছে।
Leave a Reply