কালকিনি প্রতিনিধিঃ
মাদারীপুরে নিখোঁজের ১১ মাস পর প্রেমিকের সেপটিক ট্যাংকি থেকে মুর্শিদা আক্তার (১৬) নামে এক কিশোরীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
শনিবার (৯ জানুয়ারী) রাত ৮টার দিকে জেলার কালকিনি উপজেলার ডাসার থানার পূর্ব বোতলা গ্রাম থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় ও মামলার বিবরন সূত্রে জানা গেছে, ডাসার থানার পূর্ব বোতলা গ্রামের চাঁনমিয়া হাওলাদারের দশম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে মুর্শিদা আক্তারের সঙ্গে একই গ্রামের মজিদ আকনের ছেলে সাহাবুদ্দিন আকনের প্রেমের সম্পর্ক হয়। পরে সম্পর্কটি দুপরিবারই মেনে নেয় ও তাদের বিবাহের কথা বার্তা হয়।এ সম্পর্কের সূত্র ধরেই গত বছরের ফ্রেব্রুয়ারি মাসে মুর্শিদাকে বাড়ি থেকে মাদারীপুর শহরে চিকিৎসা করানোর কথা বলে শাহাবুদ্দিন আকন নিয়ে যায়।
এরপর ওই দিন দুপুরে পরিবারের লোকজন মুর্শিদার খোজ খবর নেওয়ার জন্য শাহাবুদ্দিন কে ফোন করলে সে মুর্শিদা তার সাথে মাদারীপুরে যায়নি বলে জানান।
পরে মুর্শিদা নিখোঁজ থাকায় গত বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি মুর্শিদার পরিবার ডাসার থানায় একটি জিডি করে। এতে কোনো প্রতিকার না হওয়ায় গত বছরের ৪ মার্চ সাহাবুদ্দিনসহ পাঁচজনকে আসামি করে ডাসার থানায় একটি মামলা করেন মুর্শিদার মা মাহিনুর বেগম।
দীর্ঘদিন মামলার কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় মামলাটি পিবিআইতে স্থানান্তরের আবেদন করে বাদী পক্ষ। পরে মামলাটি মাদারীপুর গোয়েন্দা পুলিশ তদন্তভার গ্রহণ করে।
এরপর গত বৃহস্পতিবার মামলার আসামি সাহাবুদ্দিন আকন আদালতে আত্মসমর্পণ করে।
পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই তারিকুল ইসলাম আসামি সাহাবুদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
আজ শনিবার বিকালে সাহাবুদ্দিন হত্যাকান্ডে নিজের সম্পৃক্ততার বিষয় গোয়েন্দা পুলিশের কাছে স্বীকার করে এবং লাশ গুম করার কথাও স্বীকার করে।পরে সাহাবুদ্দিনের দেয়া তথ্য মোতাবেক রাত ৮টার দিকে সাহাবুদ্দিনের বাড়ির সেফটিক ট্যাংকি থেকে মুর্শিদার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতের মামা টিপু সুলতান বলেন, আমার ভাগ্নিকে গত বছরের ফ্রেবুয়ারি মাসে প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে শাহাবুদ্দিন মাদারীপুরে চিকিৎসার কথা বলে নিয়ে যায়।এরপর মুর্শিদা বাড়ি না ফেরায় আমরা মুর্শিদার খোজ খবর নেওয়ার জন্য শাহাবুদ্দিন কে ফোন করলে সে মুর্শিদা তার সাথে মাদারীপুরে যায়নি বলে জানান। এরপর দীর্ঘদিন নিখোঁজ থাকার পর আমরা থানায় মামলা করি।পরে আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এরপর আসামির দেয়া স্বীকারোক্তি মোতাবেক আসামির বাড়ির সেফটিক ট্যাংকি থেকে মুর্শিদার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
মাদারীপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল হান্নান মিয়া বলেন, আসামির দেওয়া তথ্যর ভিত্তিতে আসামির বাড়ির সেফটিক ট্যাংকি থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
Leave a Reply