কাঠাঁলবাড়ি ব্যুরোঃ
করোনা ভাইরাসের সংক্রমনরোধে সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে দীর্ঘ ৪৯ দিন বন্ধ থাকার পর বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে।তবে প্রশাসনের বিধিনিষেধ থাকায় স্পীডবোট চলাচল বন্ধ রয়েছে।
সোমবার(২৪ মে) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সরেজমিনে ঘাটে এসে দেখা যায়, ভোর থেকে থেকে ঢাকাগামী যাত্রীরা লঞ্চে পার হতে শুরু করেছেন। তবে লঞ্চে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে ৬০% বর্ধিত ভাড়া নিয়ে লঞ্চ চলাচল করছে।তবে দীর্ঘদিন পর লঞ্চ চলাচল শুরু করায় স্বস্তি দেখা দিয়েছে যাত্রীদের মধ্যে।আর প্রানচাঞ্চল্য ফিরে পেয়েছে দক্ষিণ বঙ্গের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত বাংলাবাজার -শিমুলিয়া নৌরুটের এই বাংলাবাজার ঘাট।
এর আগে গত ৫ এপ্রিল থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। তবে এই সময়ে নৌরুটে শুধুমাত্র ফেরি চলাচল স্বাভাবিক ছিল। বিকল্প নৌযান না থাকায় যাত্রীদের চরম ভোগান্তি মাথায় নিয়ে ঈদে বাড়ি ফিরতে হয়েছে একই সাথে ঈদের পর ঢাকায় ফিরতে হচ্ছে।
এদিকে লঞ্চ চলাচল শুরু করায় যাত্রীরা ফেরির পাশাপাশি লঞ্চে পদ্মা নদী পার হচ্ছে। ফলে ফেরিতে কমে এসেছে যাত্রীচাপ আর গাদাগাদি অবস্থা। যাত্রীদের বেশির ভাগই লঞ্চে পার হচ্ছে।
লঞ্চ কর্তৃপক্ষ দাবি করছেন, তারা ঘাটে দাঁড়িয়ে থেকে স্বাস্থ্যবিধি মোতাবেক আগে তুলনায় অর্ধেক যাত্রী উঠাচ্ছেন লঞ্চে।এতে আগে ৩৫ টাকা ভাড়ার পরিবর্তে তারা এখন ৫৫ টাকা করে জনপ্রতি ভাড়া নিচ্ছেন। দীর্ঘদিন পরে লঞ্চ চালু হওয়ায় লঞ্চ মালিক-শ্রমিকদের মাঝেও স্বস্তি দেখা দিয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ’র বাংলাবাজার লঞ্চ ঘাট সূত্রে জানা গেছে, নৌরুটে ছোট-বড় মিলিয়ে ৮৬ টি লঞ্চ, ২ শতাধিক স্পীডবোট ও ১৭ টি ফেরী চলাচল করে।
তারা আরো জানায়, গত ৫ এপ্রিল থেকে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে লঞ্চ ও স্পীডবোট চলাচল বন্ধ ছিল নৌরুটে। স্পিডবোট চলাচল বন্ধের নির্দেশনা থাকলেও নিয়ম ভেঙে কিছু স্পিডবোট যাত্রী পারাপার করেছিল। তবে গত ৩ মে স্পিডবোট দূর্ঘটনার পর নৌরুটে স্পিডবোট, ট্রলার চলাচল বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। এরপর থেকে বন্ধ থাকে এসকল নৌযান। বিকল্প নৌযান না থাকায় যাত্রীদের শুধুমাত্র ফেরিতে পদ্মা পার হতে হয়েছে। দূর পাল্লার লঞ্চ বন্ধ থাকায় দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীদের এই নৌরুট ব্যবহার করে রাজধানী ও বাড়িতে যাওয়া-আসা করতে হয়েছে। ফলে যাত্রীদের অস্বাভাবিক চাপ তৈরি হয় নৌরুটে। যাত্রীচাপে ফেরিতে যানবাহন পারাপারে অনেকটাই ব্যহত হয়।
অন্যদিকে গত ১২ মে এই নৌরুটে শিমুলিয়া থেকে বাংলাবাজার ঘাটের উদ্দেশ্য ছেড়ে আসা দুটি ফেরীতে প্রচন্ড গরমে ও হিটস্ট্রোক করে ৫ জন যাত্রী নিহত হন।
বিআইডব্লিউটিএ’র বাংলাবাজার লঞ্চঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আক্তার হোসেন বলেন,’ধারন ক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে লঞ্চ চলাচল শুরু করেছে। সোমবার ভোর ৬ টায় বাংলাবাজার ঘাট থেকে লঞ্চ শিমুলিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে লঞ্চ চলাচল শুরু। আগের তুলনায় অর্ধেক যাত্রী নিয়ে লঞ্চ চালু হওয়ায় যাত্রীদের মধ্যে স্বস্তি দেখা গেছে।
বিআইডব্লিউটিসি’র বাংলাবাজার ফেরিঘাট এর ব্যবস্থাপক মোঃ সালাউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছে, লঞ্চ চলাচল শুরু করায় ফেরিতে যাত্রীদের চাপ কমেছে। ফলে যানবাহন পারাপার সহজ হয়েছে। সকাল থেকেই যাত্রীরা লঞ্চে পার হচ্ছে। তাই ফেরিতে যাত্রী পারাপারের সংখ্যা কমেছে।
Leave a Reply