1. : deleted-e5fzDXca :
  2. rafiqulislamnews7@gmail.com : Rafiqul Islam : Rafiqul Islam
  3. jmitsolutionbd@gmail.com : jmmasud :
  4. : wp_update-1720111722 :
মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:২৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
শিবচরে ভোক্তা অধিকারের অভিযান, ৫১ হাজার টাকা জরিমানা দীপ্ত দে হত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ২৭ জনের নামে মাদারীপুরে মামলা শিবচরের হৃদয় হোসেন শিহাব হত্যার আসামী দিলীপ কুমার আগরওয়াল ৩ দিনের রিমান্ডে লক্ষ্মীপুরে বন্যার্তদের জন্য ৩ হাজার প্যাকেট ত্রাণ পাঠালো মানবিক শিবচর এক্সপ্রেস শিবচরে মানসিক প্রতিবন্ধীকে নির্মমভাবে হাতুরিপেটা, এলাকাবাসীর প্রতিবাদ সমাবেশ বাড্ডা থানায় হত্যা মামলায় শেখ হাসিনাসহ শিবচরের ১৬১ জন আসামী হাসপাতালে অনিয়ম বন্ধ ও সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন মাদারীপুরে স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন কোটা আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন শিবচরের কলেজছাত্র শাকিল, চান চিকিৎসা সহায়তা খালেজা জিয়ার ৭৯ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শিবচরে দোয়া-মাহফিল

কোন কিছুতেই থামছেনা কোটা আন্দোলনে নিহত শিবচরের শিহাবের মায়ের আহাজারি

  • প্রকাশিত : বুধবার, ৩১ জুলাই, ২০২৪, ৮.৩৫ এএম
  • ২৬৪ জন সংবাদটি পড়েছেন।

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি:

ছেলেতো আমার না, আমার ছেলে হলে তো আমার কাছেই থাকতো। আল্লার মাল আল্লায় নিয়া গেছে। কে গুলি করলো আমার বাজানরে! কেনো গুলি করলো! আমার বাজানতো আন্দোলনে যায়নাই। আমি কার কাছে বিচার চামু। কে বিচার করবো! কার বিরুদ্ধে বিচার চামু! আমার বাজানরে কি আর ফিরে পামু! আমার বাজান কই গেলোগা! আমার আর কেউ রইলো না জগতে। আল্লার কাছে বিচার দিলাম, আল্লাহ, আমার বাজানরে যারা গুলি করে মারছে তাদের তুমি দেখছো তুমিই বিচার কইরো, তাদের হেদায়েত কইরো।এমন কথা গুলো বলতে বলতে মূর্ছা যাচ্ছে গত শুক্রবার (১৯ জুলাই) রাজধানীর বাড্ডার লিংকরোড এলাকায় গুলিতে নিহত হওয়া মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলা সন্নাসীর চর ইউনিয়নের আজগর হাওলাদারের কান্দি এলাকার হৃদয় হোসেন সিহাবের মা নাসিমা বেগম।

নিহত হৃদয় হোসেন সিহাব (১৮) ওই এলাকার দিন মজুর শাহ আলম হাওলাদারের ছেলে।এছাড়াও সিহাবের বড় এক বোন রয়েছে।

এদিকে একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে নির্বাক বাবা।কারো সাথেই তিনি কথা বলতে পারছেন না।মানুষ দেখলে তিনি শুধু চেয়ে থাকেন।কখনো বাড়ির উঠানে হাটেন।কখনো বাড়ির বাহিরে রাস্তা দিয়ে এদিক ওদিক ঘুরে বেড়ান।কারো সাথে কোন কথা বলেন না তিনি।ছেলের শোকে মনে হয় বাকরুদ্ধ বাবা।

শনিবার বিকেলে সরেজমিনে যাওয়া হয় শিহাবের বাড়িতে।সেখানে গিয়ে দেখা যায় কেউ যাচ্ছে শিহাবের বাড়িতে আবার স্বজনদের অনেকেই যাচ্ছে শিহাবের কবরস্থানে। কেউ পরিবারের সদস্যদের শান্তনা দিচ্ছেন।

এসময় শিহাবের মা আহাজারি করে বলতে থাকেন কেউ বাবারে দেখতে দিলোনা।আমার বাবার তো কোন দোষ ছিলোনা। কেন বাবারে গুলি করলো? কেন বাবারে মেরে ফেললো?বাবায় কয়দিন আগে বলে কাজ পুরোপুরি শেখা হলে বিদেশে যাবে।আমি পাসপোর্ট করে দিবো বলেছিলাম। আর পাসপোর্ট করতে হবে না।আমার বাবায় আর আইবো না।আমার মা কইবো না।আল্লাহ তুমি এইয়া কি করলা।আমার মানিককে কেনো কেড়ে নিলা?? ওর তো কোন দোষ নেই।

শিহাবের স্বজরা জানান, ছোটবেলা থেকে শিহাব অত্যন্ত ভদ্র ও নম্র প্রকৃতির স্বভাবের ছিলো।স্থানীয় রাজারচর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৮ম শ্রেনী পর্যন্ত লেখা পড়া শেষ করে।পরিবারে তার বাবা দিন মজুর,কখনো কখনো গাড়ি চালাতেন।এতে সংসারের অভাব ঘুচাতে হিমসিম খেতেন শাহ আলম। পরিবারের সকলের সম্মতিতে ২০২২ সালের প্রথম দিকে শিহাবের দুর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই মনির হোসেনের মালিকানাধীন লিং রোড এলাকার “হাসান স্টিল এন্ড ফার্নিচার” নামে এক দোকানের কারখানায় ফার্নিচারের কাজ শিখতে দেওয়া হয় শিহাবকে।সেখানে গত আড়াই বছর ভালোভাবেই কাজ শিখতে ছিলো শিহাব। কথা ছিলো আগামী বছরের শুরুতে পাসপোর্ট করে বিদেশে যাওয়ার।

এদিকে কারখানায় কাজের জন্য একই এলাকায় দোকান মালিক মনিরের বোনের বাসায় তিন বেলা খেতেন শিহাব।গত শুক্রবার জুমার নামাজের পরে কোটা বিরোধী আন্দোলনের সময় ওই বাসায় খেয়ে কারখানায় ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হন শিহাব।এসময় রাস্তায় সুয়ে নিজ পড়নের পাঞ্জাবী ছিড়ে শরিরের রক্ত ঝড়াও বন্ধ করতে ছিলো শিহাব। ততক্ষণে সে নিস্তেজ হতে থাকেন।এসময় শিহাবকে চিনতে পেরে ওই এলাকার লোকজন দোকান মালিক মনিরকে জানায়।পরে স্থানীয় লোকজন ওই এলাকার নাগরিক স্পেশালাইজড হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

দোকান মালিক মনির হোসেন বলেন,শুক্রবার দুপুরে খাওয়ার শেষে ও দোকানে ফিরতেছিলো।আমি বাসায় ঘুমিয়ে পড়ছিলাম। সাড়ে তিনটার দিকে একজন ফোন দিয়ে আমাকে জানান যে “আপনার লোক গুলি খাইছে” দ্রুত আসেন।পরে আমি সেখানে যাই।যেয়ে শুনি ওরে মধ্য বাড্ডার একটি হাসপাতালে নিছে।পরে আমি সেখানে যাই।সেখানে তারা বলে এই রোগীর অবস্থা ভালো না ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যান পরে সেখান থেকে নাগরিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে তারা বলে মারা গেছে। ”

তিনি আরো বলেন,আমার কারখানার সামনে একটি মাদ্রাসা ছিলো।সেই মাদ্রাসার একজন হুজুর সে আমাকেও চিনে শিহাবকেও চিনে। ও রাস্তায় পড়েছিল। তখন লোকজন ওকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার সময় ওই হুজুরে ওরে চিনে আমাকে ফোন দিয়ে জানান।

শিহাবের বোনের স্বামী নিরব হোসেন জানান,সেদিন ছিলো শুক্রবার,১৯ জুলাই জুমার নামাজের পরে দুপুরের খাবার খেয়ে ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হন শিহাব। পরে সন্ধ্যার দিকে আমরা খবর পাই।পরে লাশ আনতে আনতে রাত ১১ টা বেজে যায়।পরে আমরা ওকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করি।

মিঠু নামে শিহাবের এক চাচাতো ভাই বলেন,ওই দিন বিকেল ৫ টার দিকে আমাদের বাড়িতে ফোন আসে।ও গুলি খেয়েছে। পরে আমরা দোকানের মহাজন মনিরের সাথে যোগাযোগ করি।পরে শুনি মারা গেছে। তখন ওখানে যারে আছে তাদের সহযোগিতায় লাশ বাড়িতে আনা হয়।

শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন,”বিষয়টি আজ আমি জেনেছি। এবিষয়ে আমাদের ডিসি স্যারের সাথে আলোচনা করবো দেখি কোন সহায়তা করা যায় কিনা।”

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2022
Don`t copy text!