কাঠালবাড়ি ব্যুরোঃ
মাদারীপুরের শিবচরে রেশমা (২০) নামের গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে । এ ঘটনায় স্থানীয়রা গৃহবধূর স্বামীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
শনিবার (১ মে) সন্ধ্যার দিকে উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের তাহের ফকির কান্দি গ্রামের ধলু জমাদ্দারের বাড়িতে থেকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।
নিহত রেশমা ওই গ্রামের ধলু জমাদ্দারের ছেলে ঠান্ডু জমাদ্দারের স্ত্রী ও উপজেলার মাদবরচর ইউনিয়নের খাড়াকান্দি গ্রামের দাদন শেখের মেয়ে।প্রায় এক বছর আগে তাদের বিয়ে হয়।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রায় এক বছর আগে শিবচর উপজেলার মাদবরচর ইউনিয়নের খাড়াকান্দি গ্রামের দাদন শেখের মেয়ে রেশমার (২০) সাথে একই উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের তাহের ফকির কান্দি গ্রামের ধলু জমাদ্দারের ছেলে নান্নু জমাদ্দারের সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই স্বামী, শশুর, শাশুড়ীর সাথে রেশমার মনমালিন্য চলছিল। এতে প্রায়ই রেশমার সাথে তার স্বামীর ঝগড়া হতো। রেশমাকে সে মারধরও করতো বলে রেশমার পরিবারের অভিযোগ।
আজ সকালে রেশমাকে বাবার বাড়ি নিয়ে যেতে তার ভাই মুনকির শেখ নান্নুদের বাড়িতে আসে। বোনকে বাড়ি নিয়ে যাবে বলে রেশমার শাশুড়ীর কাছে বলে। নান্নু বাড়ি নেই অজুহাতে রেশমার শাশুড়ী তাকে পরে আসতে বলে। তাই মুনকির একই গ্রামে নানা বাড়িতে চলে আসে। এদিকে স্বামী নান্নু বাড়ি আসার পর সব শুনে রেশমাকে বাবার বাড়ি যেতে নিষেধ করে। এনিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে ঠান্ডু বাড়ি থেকে বাইরে চলে যায়। এদিকে রেশমার ভাই মুনকির বিকেলে সাড়ে পাঁচটার দিকে আবার আসে রেশমাকে নিতে। এসময় রেশমাকে অনেক ডেকেও ঘরের ভিতর থেকে কোন সাড়া না পেয়ে মুনকিরসহ স্থানীয়রা দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে ঘরের আড়ার সাথে রেশমার ঝুলন্ত লাশ দেখে।
এ খবর আশপাশে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা কুতুবপুর বাজার থেকে স্বামী নান্নুকে আটক করে রেখে পুলিশে খবর দেয়।
পরে সন্ধ্যার দিকে শিবচর থানার অফিসার ইনচার্জ মো: মিরাজুল হোসেনসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌছে লাশ উদ্ধার করে স্বামী নান্নুকে আটক করে।
নিহত রেশমার ভাই মুনকির শেখ বলেন, সকালে আমার বোনকে নিতে আসলে বোন জামাই বাড়ি না থাকায় আমার বোনের শাশুড়ী আমাকে চলে যেতে বলে। বিকেলে আসলে আমার বোনের ঘর বাইরে থেকে শিকল আটকানো দেখি। পরে দরজা খুলে ভিতরে গিয়ে আমার বোনের লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখি। আমার বোনকে ওরা মেরে লাশ ঝুলিয়ে রেখেছে। আমরা এই হত্যার বিচার চাই।
নিহতের বাবা দাদন শেখ বলেন, বিয়ের পর থেকেই আমার মেয়েকে তার শাশুড়ী অনেক কষ্ট দিতো। এনিয়ে জামাইর সাথে প্রায়ই রেশমার ঝগড়া হতো। কিন্তু এভাবে আমার মেয়েকে ওরা পরিকল্পিতভাবে মেরে ফেলবে এটা ভাবিনি। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।
শিবচর থানার অফিসার ইনচার্জ মো: মিরাজুল হোসেন বলেন, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয়রা গৃহবধূর স্বামীকে আটকে আমাদের হাতে সোপর্দ করেছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য মাদারীপুর মর্গে প্রেরন করা হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই হত্যা না আত্মহত্যা তা জানা যাবে।
Leave a Reply