প্রতিনিধি শিবচরঃ
করোনা মহামারীর কারণে দীর্ঘ দেড় বছর দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পর আগামী ১২ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রম চালু হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্লাস চালুর জন্য স্বাস্থ্য বিধি মেনে নিচ্ছে নানা প্রস্তুতি। তবে বন্যার পানিতে শিবচর উপজেলার নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার কারনে পাঠদানে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে উপজেলার ২৬ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়।উপজেলায় ১৮০ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এরমধ্যে ২৬টি বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে, মাঠে ও যাতায়াতের রাস্তায় পানি উঠেছে।
শিবচর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্য মতে, টানা কয়েকদিন ধরে পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আড়িয়াল খাঁ নদের পানি বিপদসীমা উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার নিম্নাঞ্চল গুলোতে বন্যার পানি উঠতে শুরু করেছে।গত কয়েকদিন ধরেই পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদের চরাঞ্চল ডুবে গেছে। এদের মধ্যে পদ্মানদী বেস্টিত শিবচর উপজেলার মাদবরেরচর, কাঁঠালবাড়ী, চরজানাজাত ও বন্দরখোলা ইউনিয়ন আর আড়িয়াল খাঁ নদীর তীরবর্তী শিরুয়াইল, নিলখী, বহেরাতলা দক্ষিন ইউনিয়নের বিস্তৃর্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় এসব এলাকার ২৬ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসের তথ্য নিয়ে কয়েকটি বিদ্যালয়ে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পানিবন্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে রয়েছে উপজেলার কাজির সুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,রিয়াজ উদ্দিন মাদবরের কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,আছিম বেপারীর কান্দি এসব বিদ্যালয়ের কোনটিতে শ্রেণিকক্ষে, কোনোটায় বিদ্যালয় মাঠে এবং কোনটায় যাতায়াতের রাস্তায় পানি উঠে গেছে। এতে দীর্ঘ দেড় বছর পর ১২ সেপ্টেন্বর থেকে বিদ্যালয় চালু হলে এসব বিদ্যালয়ে পাঠদান নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিবে। ফলে হতাশ হয়ে পড়েছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবক।
তবে এসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মধ্য সন্নাসীরচর ইউনিয়নের পূর্বখাস বাচামারা আজাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মূল ভবনটির আড়িয়াল খাঁ নদের তীরবর্তী হওয়ায় বিদ্যালয়টি যেকোন মূহুর্তে নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে।তাই সেখানেও পাঠদান অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
শিবচর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ উপজেলায় চর ও নিম্মামাঞ্চল বেশি। যে কারণে ২৬টি বিদ্যালয়ে পানি উঠেছে।তবে এর মধ্য ১৮ বিদ্যালয়ে কোনমতেই ক্লাস পরিচালনা করা সম্ভব না।এর মধ্যে সন্নাসীরচর ইউনিয়নের খাসচর বাচামারা আজাদ বিদ্যালয়টি ভাঙনের মুখে রয়েছে।গতকাল আমাদের উপজেলা চেয়ারম্যান মহোদয়,ইউএনও মহোদয়সহ আমরা বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছি। সেখানে পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ফেলে ভাংগন রোধের চেষ্টা করবে। আরো কিছু বিদ্যালয় ঝুঁকিতে রয়েছে। পানি বাড়তে থাকলে আরো অন্তত ২০টি বিদ্যালয় পানিতে প্লাবিত হবে।আমাদের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানিয়েছি। তারাও কয়েকটি বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছে।
মাদারীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন আহম্মেদ জানান, ‘জেলার যেসব বিদ্যালয় পানি উঠেছে ও উঠতে পারে, তার একটি তালিকা তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। এখন পর্যন্ত বেশ কিছু বিদ্যালয়ের মাঠে পানি উঠেছে। কিছু বিদ্যালয়ের চলাচলের রাস্তায় পানি উঠেছে তবে বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষে সেভাবে পানি উঠেনি। যদি পানি উঠে, তাহলে বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া হবে। এরমধ্যে শিবচর উপজেলার চরাঞ্চলের বিদ্যালয়গুলো বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।’
Leave a Reply