শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি:

মাদারীপুরের শিবচরে পাওনা টাকা আনতে গিয়ে মো: আবুল কালাম নামে এক ব্যবসায়ী চাঁদাবাজদের হামলার আহত হয়েছে। এঘটনায় মা- মেয়েসহ ১০ চাঁদাবাজ কে গ্রেফতার করেছে শিবচর থানা পুলিশ।

রবিবার বিকেলে শিবচর পৌরসভার গুয়াতলা এলাকায় (হাতির বাগান মাঠ সংলগ্ন) এ ঘটনা ঘটে।

আহত ব্যবসায়ী আবুল কালাম শিবচরের যাদুয়ারচর দাইকান্দি এলাকার আনিচ মুন্সীর ছেলে।সে শিবচর পৌরসভার ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী পৌর মার্কেটের একজন কসমেটিকস ব্যবসায়ী।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, শিবচরের চর গুয়াতলা এলাকার দেলোয়ার হোসেন বেপারীর স্ত্রী (বর্তমানে শিবচর পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের (হাতির বাগান মাঠ সংলগ্ন)মোঃ বিল্লাল হোসেন এর বাড়ির ভাড়াটিয়া) শারমিন সুলতানা লিপি (৩২) ও তার মেয়ে শায়লা শারমিন (১৬), দক্ষিন চর তাজপুর (সিপাইকান্দি) এলাকার
লোকমান সিপাইীর ছেলে কৌশিকুর রহমান সিপাইী ওরফে কৌশিক (২৮), একই এলাকার আঃ রব সিপাহীর ছেলে রুবেল সিপাইী (২৫), পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের সিবরায়ের কান্দি গ্রামের বাদল শেখের ছেলে
ইয়াছিন শেখ (২০), শিরুয়াইল ইউনিয়নের উৎরাইল এলাকার শাহ আলম ফকিরের ছেলে মোঃ হাসান ফকির (২৯), পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের শিবরায়েরর কান্দি এলাকার জালাল খানের ছেলে ফয়সাল খান (২০), একই এলাকার মোঃ হোসেন হাওলাদারের ছেলে ইমন হাওলাদার (২০),বহেরাতলা উত্তর ইউনিয়নের যাদুয়ারচ এলাকার মোস্তফা মিয়ার ছেলে ফয়সাল মিয়া (২০) ও পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের শিবরায়ের কান্দি এলাকার ওয়ার্ডের জহিরুল ইসলাম হাওলাদারের ছেলে জিহাদ হাওলাদার (২০)।সোমবার দুপুর ১২ টার দিকে শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

মামলার বিবরন ও ভুক্তভোগী সুত্রে জানা যায়, মো: আবুল কালাম নামে ওই ব্যবসায়ী
শিবচর বাজারস্থ ইলিয়াছ আহমেদ চৌধুরী পৌর সুপার মার্কেটে ফ্যাসান কসমেটিকস নামে একটি দোকান করেন।মাস খানেক আগে আসামী শারমিন সুলতানা লিপি ও তার মেয়ে শায়লা শারমিনদ্বয় ওই কসমেটিকসের দোকান হতে ২,১০০/-টাকার বিভিন্ন মালামাল বাকীতে ক্রয় করে।পরে বিভিন্ন সময় ওই ব্যবসায়ী পাওয়া টাকা চাইলে তাহারা বিভিন্ন সময় কাল ক্ষেপন করে। গতকাল দুপুরে ওই ব্যবসায়ী শারমিন সুলতানা লিপির মোবাইল নাম্বারে ফোন দিয়ে টাকা চাইলে তিনি তার হাতির বাগান এলাকার ভাড়ার বাসায় বিকেলে এসে টাকা নিতে বলেন।পরে তার কথা অনুযায়ী বিকেলে সাড়ে ৩ টার দিকে ওই ব্যবসায়ী তার বাসায় যান।এসময় বাসায় প্রবেশ করতে না করতেই
শারমিন সুলতানা লিপি ও তার মেয়ে শায়লা শারমিন পূর্বপরিকল্পিতভাবে উল্লেখিত আসামীদের সহায়তায় ওই ব্যবসায়ীকে তাদের ভাড়া বাসার ১টি রুমের মধ্যে আটক করে এলোপাথারী মারপিট করে। এক পর্যায়ে সকল আসামী তাকে মৃত্যুর ভয়ভীতি দেখিয়ে তার নিকট ৫০,০০০/- টাকা চাঁদা দাবী করে। পরে আসামী কৌশিকুর রহমান সিপাইী ওরফে কৌশিক চাঁদা বাবদ ওই ব্যবসায়ীর পকেট থেকে ৫,০০০/- টাকা নিয়া যায়।পরে ওই ব্যবসায়ী তার কাছে আর কোন টাকা নাই বলে জানালে আসামীগন বিকাশ (০১৭৩১৮২০২৬৭) নম্বরে বাকী চাদার ৪৫,০০০/- টাকা পাঠিতে বলে। উক্ত চাদার টাকা না দিলে ওই নারী ও তার মেয়ে ওই ব্যবসায়ীকে বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা মামলাসহ নারী নির্যাতনের মামলায় ফাঁসিয়ে দিবে মর্মে হুমকি দেয়। এছাড়াও তাকে প্রান নাশের হুমকি প্রদান করে।
পরে ওই ব্যবসায়ী তার নিকট আত্মীয় স্বজনদের জানালে তারা শিবচর থানা পুলিশকে জানালে শিবচর থানার উপপরিদর্শক মিলন কুমার হালদারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ওই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে তাদের আটক করে।আজ দুপুরে তাদের আদালতে প্রেরন করেন।

পরে পুলিশ ওই ব্যবসায়ীকে চিকিৎসার জন্য শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরন করেন।বর্তমানে তিনি শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসাধীন রয়েছে।

আহত ব্যবসায়ী আবুল কালাম বলেন,আমি আমার পাওনা টাকা চাইলে সে বলে তার স্বামী আসলে দিবেনসহ বিভিন্ন টালবাহানা করে।গতকাল দুপুরো তিনি আমাকে তার বাসায় গিয়ে টাকা আনতে বললে আমি সরল বিশ্বাসে তার বাসায় যাই ওখানে তিনি পূবপরিকল্পনা অনুযায়ী লোকজন ঠিক করে আমাকে মারধর করে।আমার কাছে থাকা ৫ হাজার টাকা নিয়ে যায় ও আমাকে আরো ৪৫ হাজার টাকা বিকাশে দিতে বলেন।পরে আমার লোকজন ও থানা পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে।আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।”

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ব্যবসায়ী আবুল কালাম গত রাতে কৌশিক সিপাইসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।ওক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে থানায় একটি মামলা রুজু হয়।পরে আসামীদের গ্রেফতার করা হয়।আজ দুপুরে তাদের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন করা হয়েছে। মামলাটি তদন্তনাধীন।