মাদারীপুর প্রতিনিধি :
মাদারীপুরে মিথ্যা মামলা দিয়ে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গিয়ে মামলার বাদিকে জেল হাজতে প্রেরণ করছে আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে মাদারীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মানব পাচার প্রতিরোধ দমন আইনে হওয়া একটি মামলায় ৩ আসামীর জামিনের শুনানীকালে বাদীর স্বীকারোক্তি মতে মিথ্যা মামলা করায় বাদীকে জেল হাজতে প্রেরণ করার নির্দেশ দেন বিচারক নিতাই চন্দ্র সাহা।একই সাথে ওই মামলায় হাজতে থাকা ৩ আসামী দেলোয়ার মুন্সি মজিবর মন্সি এবং পলাশ মুন্সিকে জামিন দেন বিচারক।
স্থানীয় ও মামলার বিবরন থেকে জানা গেছে, জেলার শিবচর উপজেলার বাঁশকান্দি ইউনিয়নের উত্তর বাঁশকান্দি গ্রামের শাহ আলম শেখের সাথে একই এলাকার দেলোয়ার মুন্সীসহ অনেকের সাথে জমি-জমা নিয়ে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে উভয় পক্ষ আদালতে একাধিক মামলা করে। জমির মামলা চলমান থাকা অবস্থায় বিরোধীদের শায়েস্তা করতে শাহ আলম শেখ তার শ্যালক ইসমাইলকে লুকিয়ে রেখে ইটালীতে আসামীদেও মাধ্যমে ১৩লাখ টাকার বিনিময়ে পাঠানোসহ মানবপাচারের অভিযোগ এনে প্রতিপক্ষের ৬ জনকে আসামি করে গত ২৪ মে মাদারীপুর আদালতে মানব পাচার আইনে একটি দায়ের করেন। আদালত মামলাটি সদর থানায় প্রেরণ করলে তা এজাহার হিসাবে নিয়ে মামলাটি তদন্তে নামে শিবচর থানা পুলিশ।
গত ৯ আগষ্ট মামলার আসামী দেলোয়ার মুন্সী, মজিবর মুন্সী ও পলাশ মুন্সীকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায় পুলিশ। পরে আদালত তাদের জেল হাজতে প্রেরণ করে। আসামীরা গ্রেফতার হওয়ার পরে ঐদিন রাতেই স্থানীয়ভাবে আপোষ-মিমাংসার সালিশ হয়। উক্ত সালিশির রায় উভয়পক্ষ মেনে নেয়। কিন্তু একাধিকবার আদালতে জামিন আবেদন করেও আসামীরা জামিন পাননি।
আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে আবার জামিন আবেদন করেন আসামী পক্ষের আইনজীবী। এসময় জামিন আবেদনের নথির সাথে মিমাংসা পত্রের কাগজপত্রও আদালতে জমা দেয়। জামিন শুনানির সময় মামলার বাদী শাহ আলম শেখও তার শ্যালক ইসমাইল আদালতে উপস্থিত হন। এ সময় আদালতের বিচারক বাদী শাহ আলম ও ইসমাইলের জবানবন্দী গ্রহনকালে বাদী এক পর্যায় মিথ্যা মামলা করার কথা স্বীকার করে। বাদীর স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে আদালতের বিচারক জেলা জজ নিতাই চন্দ্র সাহা মামলার বাদীকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে আসামীপক্ষের আইনজীবি মহিদুল ইসলাম জানান, মিথ্যা মামলা করার স্বীকারোক্তি দেওয়ায় মাননীয় বিচারক বাদী শাহ আলমকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এখন শাহ আলমের বিরুদ্ধে দন্ড বিধি ২১১ ধারা মোতাবেক মামলা করা হবে।