1. rafiqulislamnews7@gmail.com : Rafiqul Islam : Rafiqul Islam
  2. jmitsolutionbd@gmail.com : jmmasud :
মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০৮:৩৯ পূর্বাহ্ন

শিবচরে শীতের আগমনি বার্তা

  • প্রকাশিত : শনিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২২, ১০.৪০ পিএম
  • ৩৮১ জন সংবাদটি পড়েছেন।

শিবচর প্রতিনিধিঃ

আজ ১৩ কার্তিক। বাংলা পঞ্জিকায় শুরু হয়েছে হেমন্তকাল।পৌষ আগমনের বাকি দেড় মাস। কিন্তু প্রকৃতি এখনই শীতের পরশ বুলিয়ে যাচ্ছে।শরৎ শেষে হেমন্তের বর্তমান চেহারা যেন বলে দিচ্ছে ঋতুর পালাক্রম। প্রকৃতিতে শীতের আভাস কুয়াশা এসে হাজির। ইতোমধ্যে শেষ রাতে শীত অনুভব হচ্ছে দেশের দক্ষিণের জেলা মাদারীপুরে।

এদিকে ঘুর্ণিঝড় সিত্রাং এর পরে
গত কয়েকদিন ধরে দেখা শান্ত-নীরব প্রকৃতি। নদী-খালে কমতে শুরু করেছে বর্ষার পানি। ভোরে শিশিরসিক্ত করছে দূর্বাঘাস ও গাছপালা। সকালের কোমল রোদে মুক্তোদানার মতো জ্বলজ্বল করে। তবে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দিনের বেলা তাপমাত্রা যেন কমার সম্ভাবনাই নেই।


এদিকে, শীতকালের বাকি আরও দেড় মাস। পদ্মা নদী ও আড়িয়াল খাঁ বেস্টিত এ জেলায় আগাম শীতের দেখা মেলেছে। ইতোমধ্যেই এ অঞ্চলে গত ১০ থেকে ১৫ দিন ধরে শুরু হয়েছে শীতের আগমনী বার্তা। মধ্যরাতের পর থেকে কুয়াশা পড়ছে। রাত যত বাড়ে, তত শীতের অনুভবও বৃদ্ধি পায়। প্রকৃতির এই পরিবর্তন বার্তা দিচ্ছে এই বুঝি শীত এলো।

এদিকে মাঠ-ঘাটে শ্রমজীবীরা একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারছেন। পশ্চিমাকাশে সূর্য ঢলে পড়লে আরাম বোধ যেন আরও বেড়ে যায়।আবার কোথাও সন্ধ্যার পর থেকেই কুয়াশা এমনভাবে বিস্তৃত হয় যে, তা দৃষ্টিসীমা হরণ করার উপক্রম হয়। প্রকৃতির এই রূপ অনেকের কাছেই প্রিয়। তাই হেমন্ত অনেক বাঙালির কাছেই প্রিয় ঋতু।

সরেজমিনে শনিবার (২৯ অক্টোবর) ভোর থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত জেলার শিবচর উপজেলার বাশকান্দি, উমেদপুর পাচ্চর এলাকা, ঢাকা ভাঙ্গা এক্সপ্রেস ওয়ের শিবচরের বাস স্টান্ডসহ পদ্মা সেতু এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন গাছের ডগা, কলাপাতা, সিম কিংবা ধানের শীষে শিশির জমে থাকার দৃশ্য দেখা গেছে।টলটলে মুক্তদানার মতো শিশির জমতে শুরু করেছে সবুজ ঘাসের ডগায়।ধানের ক্ষেত ডিঙিয়ে পূর্ব দিগন্ত রাঙিয়ে উঠেছে ভোরের সূর্য। হালকা শীত শীত ভোরের ভেতর মিষ্টি রোদের ওম।তাই দুর্ঘটনা এড়াতে সড়কে গাড়ির হেড লাইট জ্বালিয়ে চালকেরা যাচ্ছে তাদের গন্তব্যে।

স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, কয়েকদিন ধরেই জেলায় শীতের আমেজ লক্ষ্য করা গেছে। ভোরের দিকে ঘন কুয়াশা পড়ছে। সবুজ ঘাস, ধান ও চা-গাছের ডগায় ফোঁটায় ফোঁটায় শিশির বিন্দুর দেখা মিলছে। জেলাজুড়ে গভীর রাতে বৈদ্যুতিক পাখা বন্ধ  রেখে শরীরে হালকা কাঁথা ও কম্বল জড়াতে হচ্ছে। রাত পেরিয়ে যখন ভোরের আগমন ঘটে তখন গাঢ় কুয়াশার দেখা মেলে কোথাও। তার মধ্যেই উঁকি দেয় নবীন সূর্য। শীতের এই অনুভূতি উপভোগ করতে ইতোমধ্যে রূপসী বাংলার ঘরে ঘরে তুলে রাখা পাতলা কাঁথা আর চাদর-কম্বল স্থান পেতে শুরু করেছে খাট-চৌকিতে।এ অঞ্চলে আগাম শীতের দেখা পাওয়ায় শীতকাল আসামাত্রই শীতের তীব্রতা বেড়ে যাবে বলে তারা আশঙ্কা করছেন।

এদিকে শিতের আগমনে স্থানীয় বাজার গুলোতে প্রচুর পরিমানে শীতকালীন শাক সব্জি নিয়ে আসতে শুরু করেছেন স্থানীয় কৃষকেরা।

এদিকে শীতের প্রস্তুতি হিসেবে এরই মধ্যে শীতের সম্বল লেপ-তোশক তৈরি শুরু করে দিয়েছেন উচ্চ ও মধ্যবিত্তরা। অনেকে পুরাতন লেপ-তোশক খুলে নতুন করে তৈরি করে নিচ্ছেন। শীতের শুরুতেই বর্তমানে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন লেপ তৈরির কারিগররা।

শিবচরের বাজারের কয়েকজন লেপ তোশকের কারিগরের সাথে আলাপ করে জানা যায়, প্রতিদিন গড়ে ১০/১২টি করে লেপ সেলাই করছেন তারা।

বাজারের যাদুয়ারচর রোডের তুলা ব্যবসায়ী জাকির হোসেন বলেন,”তুলা ও কাপড়ের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার লেপের দামও অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। তার পর উচ্চ ও মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন আগেভাগেই লেপ সেলাই করছেন। কেউবা আবার পুরোনো লেপ নতুন করে সেলাই করে নিচ্ছেন।”

বাহাদুর পুর বাজারের লেপ তোশক বিক্রেতা জহিরুল বলেন, “গত কয়েকদিন দরে শীত বাড়ার কারনে অনেকেই লেপ তোশক অর্ডার করতে শুরু করেছে।আমাদের অনেক ব্যস্ততা বেড়েছে।”

শিবচর উপজেলা পরিষদ চত্বরে হাটতে বের হওয়া ফারুক মিয়া নামে এক ইউপি সদস্য বলেন,” গত কয়েকদিন ধরেই সকালে শীত পড়তে শুরু করেছে।আজ অনেক শীত।আজ তো সোয়েটার নিয়ে বের হতে হয়েছে।

পাচ্চর বাস স্টান্ডে গাড়ীর অপেক্ষায় থাকা ঢাকাগামী যাত্রী মনির মোল্লা বলেন,”সকালে বাড়িতে ভ্যানযোগে এখানে এসেছি। এতো কুয়াশা মনে হচ্ছে এখনি পৌষ মাস শুরু হয়েছে। ”

জেলার উতরাইল এলাকার শিক্ষক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন,আমি নিয়মিত ভোর থেকে আড়িয়াল খাঁর তীরে হাটাহাটি করি।আজ কুয়াশার কারনে দেরিতে হাটতে বের হতে হয়েছে।”

মাদারীপুর থেকে ছেড়ে আসা সার্বিক পরিবহনের চালক রোমান মিয়া বলেন,ভোর ৬ টা ২০ বাজে মাদারীপুর থেকে গাড়ি ছেড়েছি। মাদারীপুর থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত মোটামুটি কুয়াশা ছিলো।এক্সপ্রেস ওয়েতে আসার পরে কুয়াশা কমতে শুরু করেছে।

মাদারীপুর আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র অবজারভার আব্দুর রহিম সান্টু বলেন, ঋতু বৈচিত্র্যের কারণে মাদারীপুরে আগাম শীতের এ পূর্বাভাস।
তিনি আরও বলেন, ভোর রাতের দিকে ঘন কুয়াশা থাকার কারণে শীত অনুভূত হচ্ছে। যে কারণে এটাকে শীতের আগাম পূর্বাভাস বলা চলে। পরবর্তী সময়ে শীতের তীব্রতা আরও বেড়ে যেতে পারে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2022
Don`t copy text!