শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
মাদারীপুর শিবচরে পাওনা টাকা ফেরত চাওয়া ও বাকি না দেওয়ায় শফিকুল (৩৫) ও সবুজ (৩০) নামে দুই ভাইকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে উপজেলার দ্বিতীয়খন্ড ইউনিয়নের নদীর পাড় বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন ওই ইউনিয়নের মুজাফ্ফরপুর গ্রামের ইদ্রিস হাওলাদার ছেলে।
স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে সফিকুলের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সফিকুল ও সুবজ দুই ভাই নদীর পাড় বাজারে মুদি দোকান করেন। পাশাপাশি বিকাশ,ফেক্সি লোড ও জালানী তেলও বিক্রি করেন।গত কয়েকদিন আগে ওই দোকান থেকে বাকিতে তেল নিয়েছিলেন শরিয়পুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা এলাকার বাসিন্দা চুন্নু খানের ছেলে সাদ্দাম খান। আজ সকালে সাদ্দাম তার কয়েকজন সঙ্গীকে নিয়ে আবারও দোকানে বাকিতে মোটর সাইকেলের তেল নিতে আসলে সবুজ বাকি দিতে রাজি হয় নি। এক পর্যায়ে কথা কাটা কাটি হলে এসময় সবুজকে গাছের ডাল ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন।এসময় দোকানে থাকা তার ভাই সফিকুল এগিয়ে আসলে তাকেও পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়।পরে আসেপাশে লোকজন এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করেন।পরে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। ততক্ষণে অভিযুক্ত সাদ্দাম তার সঙ্গে থাকা লোকজন নিয়ে নগদ অর্থ, গুরুত্বপূর্ণ মালামাল লুট করে দিয়ে পালিয়ে যায়।
আহত শফিকুল জানান, নাওডোবার চুন্নু খানের ছেলে সাদ্দাম খা বাকিতে তেল নিয়ে যায়। আজ কয়েকটি মোটর সাইকেলে নিয়ে এসে আবার বাকিতে তেল চায়। পূর্বের টাকা চাওয়ায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠি দিয়ে আমার ভাইয়ের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে আহত করেন।আমি এগিয়ে গেলে তারা আমাকেও পেটায়।এছাড়া দোকানের টাকা পয়সাসহ মুল্যবান মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
শফিকুলে স্ত্রী মিম বলেন, “আমার স্বামী ও দেবর সবুজ দোকানে ছিল। সাদ্দাম বাকিতে তেল নিতে আসে কিন্তু বাকি দিতে রাজি না হলে সাদ্দামসহ আট-নয় জন আমার স্বামী ও আমার দেবরের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। আমার স্বামীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাচ্ছি। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।”
আহত সবুজ বলেন, সকালে সাদ্দাম বাকিতে তেল নিতে আসলে দেই নি। তারপর দুপুরে তারা কয়েক টি মটর সাইকেল করে দশ-বারো জন এসে দেশীয় অস্ত্র ও লাঠি দিয়ে আমাদের উপর হামলা করা হয়।আমার ক্যাশ বক্সে থাকা নগদ ১০,০০,০০০/- টাকা নিয়া যায়। তারা আমার বিকাশ, নগদ, রকেট, ফ্লেক্সিলোড, কাজে ব্যবহৃত ০২ টি ফোন এ্যন্ড্রুয়েড ফোন, যাহার মূল্য অনুমান ৪০,০০০/- টাকা এবং ০৩ টি বাটুন ফোন যাহার মুল্য অনুমান ১০,০০০/- টাকা, ০১ টি প্যাডস্টাল ফ্যান যাহার মূল অনুমান ৭,০০০/- টাকা, বিভিন্ন ইলেকক্ট্রিক মালামাল যাহার মূল্য অনুমান ৫,০০০/- টাকা ভাংচুর করিয়া সর্ব মোট অনুমান ৬২,০০০/- টাকার ক্ষতিসাধন করে।আমার ভাই এর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাচ্ছি। আমি এই দুর্বিত্তদের বিচার চাই।”
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, “ঘটনাটি শোনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল ও হাসপাতাল পরিদর্শন করেছে।তারা লিখিত অভিযোগ করেছেন। ঘটনা তদন্ত করে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”