1. rafiqulislamnews7@gmail.com : Rafiqul Islam : Rafiqul Islam
  2. jmitsolution24@gmail.com : jmmasud :
সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:২৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্ট্যাডিজ বিভাগে ২য় স্থান অর্জন করেন শিবচরের মিমো সৌদি আরব থেকে দেশে এসে স্ত্রী -সন্তানদের সাথে দেখা করতে শ্বশুর বাড়ি যাওয়ার পথে যুবকের মৃ*ত্যু শিবচরে আলোচিত রাকিব হ*ত্যা মাম*লার দুই আ*সা*মী গ্রে*ফ*তার শিবচরে শ্রেষ্ঠ গুণী শিক্ষক হলেন ইদ্রিস ও লাইলুন নাহার শিবচরে ৩ মাসের শিশুকে নদীতে ফেলে হত্যা করলো মা, অভিযুক্ত মা মানসিক ভারসাম্যহীন দাবী শিবচরে মেধাবী ছাত্র ছাত্রীদের মাঝে বৃত্তি প্রদান ক্যাম্পাসে ভালোবাসায় সিক্ত ‘জুলাই কন্যা’ মাদারীপুরের তন্বী ডাকসু নির্বাচনে শিবচর থেকে প্রার্থী হয়েছেন যারা শিবচর উপজেলা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্সপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠিত ও নতুন কমিটি গঠন যোগদানের ২২ দিনের মাথায় শিবচর থানার ওসি প্রত্যাহার

প্রাথমিক শিক্ষায় শিক্ষকের ভূমিকা-মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান

  • প্রকাশিত : শুক্রবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৫.১৮ পিএম
  • ৫৩৯ জন সংবাদটি পড়েছেন।

প্রাথমিক শিক্ষায় শিক্ষকের ভূমিকা

‘শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড’ এটা বহুল প্রচলিত প্রবাদ। এই মেরুদন্ড নির্মাণের কারিগর হচ্ছেন শিক্ষক। এখানে যে বিষয়গুলো সম্পর্কিত তা হচ্ছে – শিক্ষা, শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক। শিক্ষার ইংরেজি শব্দ হচ্ছে education এ শব্দটি এসেছে লাতিন শব্দ educare থেকে। যার অর্থ হচ্ছে শিশুর প্রতিপালন। শিশুর প্রতিপালন যেহেতু শুরু হয় তার জন্মের পর থেকে, তাই শিক্ষাও শুরু হয় জন্মের পর থেকে। এটা চলে মৃতু পর্যন্ত। সমাজের অন্ধকার ও কুসংস্কারকে দূর করার জন্য শিক্ষা আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করে। শিক্ষা বিহিন সমাজ অন্ধকারাচ্ছন্ন। নেলসন ম্যান্ডেলা বলেন, ‘জীবন ও জগৎকে পরিবর্তন করতে পারে এমন নিয়ামকই হচ্ছে শিক্ষা।’ শিক্ষার মাধ্যমেই আদিম বর্বর যুগ থেকে আধুনিক সভ্য সমাজ নির্মাণ হয়েছে। সমাজকে উন্নয়নের চরম শিখরে উন্নীত করতে উপযুক্ত শিক্ষার বিকল্প নেই। শিক্ষার মাধ্যমেই সমাজ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তাই অধ্যাপক রঙ্গলাল সেন শিক্ষাকে সমাজ নিয়ন্ত্রণের বাহন হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ইংরেজ শাসকগণ ভারতীয়দের শাসন করার জন্য এখানে শিক্ষা ব্যবস্থার প্রচলন করেছিল। উদ্দেশ্য ছিল ঐ শিক্ষার মাধ্যমে আমাদের শাসন করা। কখনই সেই শিক্ষা আমাদের সমাজের উন্নতির নিয়ামক হতে পারে না। আমাদের উন্নতির জন্য বৃটিশ প্রবর্তিত শিক্ষা ব্যবস্থার বাইরে এসে আমাদের সমাজ বিনির্মাণের প্রয়োজনে উপযুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে হবে। ইতমধ্যে আমাদের শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। জাতীয় স্বার্থে দ্রূত শিক্ষানীতির বাস্তবায়ন প্রয়োজন। শিক্ষা কাদের জন্য? অবশ্যই শিক্ষার্থীর জন্য। যেহেতু শিক্ষা শুরু হয় জন্মের পর থেকে তাই সে পরিবার থেকে তার প্রথম শিক্ষা গ্রহণ করে, এরপর বিদ্যালয়ে আসে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার জন্য। যে পরিবার যতটা শিক্ষিত সে পরিবারের শিশুর পারিবারিক প্রথম শিক্ষা ততটা উন্নত এবং সেই শিশু বিদ্যালয়ের পরিবেশের সাথে দ্রূত খাপ খেয়ে নিতে পাবে। কিন্তু আমাদের দেশের বেশির ভাগ শিশুর পাবিবারিক শিক্ষা খুবই দুর্বল মানের। তাদের বিদ্যালয়ের পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে প্রধান নিয়ামক হিসেবে কাজ করে থাকেন শিক্ষক।
মুলত: শিক্ষাকে যিনি বাস্তবে রূপদেন তিনি হলেন শিক্ষক। শিক্ষকই সমাজে শিক্ষাকে ছড়িয়ে দেন। তাঁরা হলেন সমাজের আলোকবর্তিকা। তাই শিক্ষককের ব্যক্তিত্ব হতে হবে আলোকিত, জ্ঞানী ও গুণী। তিনি হবেন অনুকরণীয় আদর্শের প্রতীক। তাঁর আচরণ, চাল-চলন, কথা-বার্তা সবকিছু হবে সমাজের অনুকরণীয় আদর্শ। তাকে হতে হবে সুবিচারক, ন্যায়পরায়ন, যুক্তিবাদী, গবেষক এবং উদ্ভাবক। এসকল গুণাবলীর প্রতিফলন ঘটাতে হবে তাঁর দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের মাধ্যমে। আমেরিকান কবি ও সাহিত্যিক আর ও এমারসনের মতে, ‘তিনিই শিক্ষক যিনি কঠিনকে সহজ করে তুলে ধরতে পারেন।’ তিনি যথার্থই বলেছেন। কঠিন বিষয়কে সহজভাবে উপস্থাপনের দক্ষতার উপরই শিক্ষকের সফলতা নির্ভর করে। যিনি এই কাজটি যত দক্ষতার সাথে করতে পারেন তিনি তত যোগ্য শিক্ষক। তিনি হন শিক্ষার্থীদের নিকট অনুকরণীয় আদর্শ।

এখন আসি আজকের মূল বিষয় প্রাথমিক শিক্ষক সম্পর্কে। আসলে প্রাথমিক শিক্ষকও যেহেতু শিক্ষক, তাই উল্লিখিত সকল গুণই প্রাথমিক শিক্ষকের থাকা উচিত। প্রাথমিক শিক্ষককে এর বাইরেও কিছু গুণ থাকা প্রয়োজন। যেহেতু শিশুকে বিদ্যালয়ের পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার দায়িত্বটা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের তাই তাদের কিছু বাড়তি গুণ থাকতে হবে। প্রথমে তাদেরকে শিশুদের সাথে মিশতে হবে। শিশুরা আসলে কী চায় সেটা আবিষ্কার করতে হবে। শিক্ষকের ইচ্ছা অনুযায়ী শিশুকে গড়ার চেষ্টা করা উচিত নয়। শিশুদের উপর কোন কিছু চাপিয়ে দেওয়া ঠিক হবে না। বরং শিশু কী চায় সেটাকেই গুরুত্ব দিতে হবে। সেভাবে শিক্ষক নিজেকে তৈরি করবেন। শিশু যা করতে চায় তাকে তাই করতে দিয়ে সে কাজের মাধ্যমেই শিক্ষার বিষয় উপস্থাপন করতে হবে। তা হলেই শিশু বিদ্যালয়ের প্রতি আকৃষ্ট হবে। বিদ্যালয়ে শিশুর প্রথমে প্রচুর খেলাধুলার সুযোগ থাকতে হবে। খেলাধুলার মাধ্যমেই তাকে শোনা ও বলার দক্ষতা অর্জন করাতে হবে। এ সময় তাদের গণিতের প্রাথমিক ধারণা ও বর্ণের সাথে পরিচয় করাতে হবে। তাদেরকে এই সময় মীনা কার্টুন সহ শিক্ষামূলক কার্টুন দেখার সুযোগ করে দেয়া যেতে পারে। বিদ্যালয়ের অন্য শিশুদের সাথে মিশতে ও বন্ধুত্ব করতে সাহায্য করতে হবে। এ সময় শিশুদের উপর শারীরিক বা মানসিক কোন শাস্তি প্রয়োগ করা যাবে না। তাহলেই শিশু বিদ্যালয়মূখী হবে। এ দায়িত্ব পালন করতে প্রাথমিক শিক্ষককে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।

এ জন্য শিক্ষকের সাথে শিক্ষার্থীর সম্পর্ক হতে হবে বন্ধুত্বপূর্ণ। শিশুর নিকট শিক্ষককে পৌঁছাতে হবে। তার মনের কাছে চলে যেতে হবে। শিক্ষককে তাঁর আচরণের মাধ্যমে শিশুর বন্ধু হয়ে যেতে হবে। তাঁকে শিশুর সাথে শেয়ার করতে হবে। তার মতামতের গুরুত্ব দিতে হবে। তার সাথে খেলা করতে হবে। কোন অবস্থায় শিক্ষক যেন শিশুর মনের ভয়ের কারণ না হন।

তাই বলতে পারি প্রাথমিক শিক্ষার মান নির্ভর করে প্রাথমিক শিক্ষকগণের উপর। যত মানসম্পন্ন কারিকুলামই তৈরি হউক না কেন, যদি মানসম্পন্ন প্রাথমিক শিক্ষক না হয় তা হলে মানসম্পন্ন প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না। মানসম্পন্ন প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়ন না হলে সার্বিক শিক্ষার মান দুর্বল হবেই। তাই জাতীয় স্বার্থে মানসম্পন্ন প্রাথমিক শিক্ষক নিয়গের ব্যবস্থা করে সার্বিক শিক্ষার মান উন্নয়নের মাধ্যমে উন্নত ও মেধা সম্পন্ন জাতি গঠনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরী।

লেখকঃ

মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান,প্রধান শিক্ষক, রাজারচর মোল্যাকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,শিবচর,মাদারীপুর।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2022
Don`t copy text!