কাঠালবাড়ি ব্যুরোঃ
৭ দিনের কঠোর লকডাউন শুরুর আগেই বাড়ি ফিরতে হবে,পৌছতে হবে আপনজনের কাছে।তাই হাজারো ভোগান্তির পরেও যেতে হবে আপনজনের ঠিকানায়। মঙ্গলবার সকাল থেকেই মাদারীপুরের শিবচরের বাংলাবাজার ঘাটে দক্ষিনাঞ্চলের ২১ জেলার যাত্রীদের ঘরে ফেরার প্রতিযোগিতা লক্ষ করা গেছে।এদিকে লঞ্চ ও স্পীডবোট বন্ধ থাকলেও ফেরি, ট্রলার ও অবৈধভাবে কিছু স্পিডবোটে করে পদ্মা পার হয়ে শিবচরের বাংলাবাজার ঘাটে আসছেন যাত্রীরা।আর ঘাট থেকে মাইক্রোবাস, থ্রি-হুইলার, ব্যাটারীচালিত অটোবাইক আর মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফিরছেন তারা। নৌ ও স্থল পথে যানবাহনে বাড়তি ভাড়া দিয়ে সরকার ঘোষিত লকডাউনের একদিন আগেই বাড়ি ফিরছেন সাধারন মানুষ।
মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) সরেজমিনে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বাংলাবাজার ঘাটে এমন চিত্রই দেখা যায়।দেখে মনে হচ্ছে ২ একদিন পরেই ঈদুল ফিতর।
বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা গেছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ১৪ এপ্রিল থেকে ‘সর্বাত্মক লকডাউনের’ ঘোষণায় বাংলাবাজার- শিমুলিয়া নৌপথে দক্ষিণাঞ্চলমুখী যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা দিয়েছে যানবাহনের পাশাপাশি ফেরিতে যাত্রীদের চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। লঞ্চ বন্ধ থাকলেও কোনো প্রকার স্বাস্থ্যবিধি ছাড়াই ফেরি, স্পিডবোট ও ট্রলারে যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে। এদিকে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় যাত্রীরা মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল, ইজবাইকসহ বিভিন্ন যানবাহনে বাড়ি ফিরছে। এই সুযোগে তিন চারগুণ বেশী ভাড়া নিচ্ছে যানবাহন মালিকরা।
বিআইডব্লিউটিসি’র বাংলাবাজার ফেরিঘাট সূত্র জানায়, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ঠেকাতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত সপ্তাহ থেকে আজ ৮ দিন ধরে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে জরুরি প্রয়োজনে উভয় ঘাটে দুটি ছোট ফেরি চালু রাখতে বলা হয়। কিন্তু গত কয়েকদিন যাবৎ ফেরি কম চলায় ঘাটে মালবাহী ট্রাকের জট সৃষ্টি হওয়ায় গত রবিবার থেকে ১৫টি ফেরিতে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার হচ্ছে।’
যাত্রীদের সাথে আলাপ করলে তারা জানায়, লকডাউনে ঢাকায় থেকে কোন লাভ নাই। শুধু খরচ বাড়বে। তাই বাড়ি যাচ্ছে তারা।’
মাহমুদউল্লাহ নামের খুলনাগামী এক যাত্রী বলেন,’কাল থেকে সব কিছু বন্ধ থাকবে। ঢাকায় থেকে কি করবো? তাই বাড়ি চলে যাচ্ছি।
এদিকে বাংলাবাজার ঘাটে ফেরীতে জরুরী যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে ঘাট এলাকায় প্রায় এক হাজারেরও বেশী যানবাহন আটকে আছে।
বরিশাল থেকে ঢাকাগামী ট্রাক চালক মামুন মিয়া,বলেন আজ ৬ দিন ধরে ঘাটে আটকা পড়ে আছি।গাড়িতে ধনিয়া নিয়ে রওনা হইছি,এগুলো গিয়ে শুকাতে হবে।আর ২/৩ দিণ এভাবে থাকলে মালগুলো পঁচে যাবে’
রায়হান নামে নড়াইল জেলার এক বাসিন্দা বলেন,’ঢাকায় থেকে চাকুরীর প্রস্তুতি নিচ্ছি। করোনায় সব বন্ধ তাই বাড়ি গিয়ে পড়াশনা করবো।একারনেই কষ্ট করে বাড়ি ফেরা,
রহিমা নামের আরেক যাত্রী বলেন,’ প্রতি রোজার ঈদের তিন/চারদিন আগে বাড়িতে যাই। এবার লকডাউন আর করোনা পরিস্থিতির কারনে রোজার আগেই বাড়ি যাচ্ছি’
বিআইডব্লিউটিএ’র বাংলাবাজার ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন,’সকাল থেকে ১৫ টি ফেরি চলছে। শিমুলিয়া থেকে অসংখ্য যাত্রী পার হয়ে আসছে ফেরিতে। ঘাটে প্রায় হাজার খানেক পরিবহন আটকা আছে।আমরা অগ্রধিকার ভিত্তিতে জরুরী পন্যবাহী যানবাহন ও এম্বুলেন্স পার করছি।
Leave a Reply