1. : deleted-e5fzDXca :
  2. rafiqulislamnews7@gmail.com : Rafiqul Islam : Rafiqul Islam
  3. jmitsolutionbd@gmail.com : jmmasud :
  4. : wp_update-1720111722 :
মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:১৬ পূর্বাহ্ন

পদ্মায় অভিযান চললেও থেমে নেই মাছ বিক্রি

  • প্রকাশিত : সোমবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৪, ৫.০১ পিএম
  • ১৮৩ জন সংবাদটি পড়েছেন।

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি:

মাদারীপুরের শিবচরে পদ্মা নদী সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি হচ্ছে ইলিশ মাছ। প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় গত ১৩ অক্টোবর থেকে মাছটি ধরা নিষেধ করেছে সরকার। কিন্তু এই কথা যেন জেলেদের কানে যাচ্ছে না। দিনরাত চলছে ইলিশ শিকার।
কিনতে দুর্গম চরাঞ্চলে ছুটে আসছেন দেশের বিভিন্ন এলাকার সাধারণ ক্রেতারা!। অনেকটা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন নিষিদ্ধ মৌসুমে গড়ে উঠা অস্থায়ী ইলিশের হাটে।প্রশাসন একদিকে নদীতে অভিযান চালাচ্ছে অন্যদিকে নদীর পাড়ে কয়েকটি এলাকায় চলছে রমরমা মাছ বিক্রি।

শিবচর উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, মা ইলিশ রক্ষায় পদ্মা নদীতে উপজেলা মৎস্য অফিস, প্রশাসন, নৌপুলিশের অভিযান চলমান রয়েছে। সময় ভাগ করে একাধিক টিম পদ্মায় অভিযান পরিচালনা করছেন। জেলে আটকসহ জব্দ করা হচ্ছে লাখ লাখ মিটার কারেন্ট জাল। গত ৭ দিনে পদ্মা নদীতে অভিযান চালিয়ে উপজেলা মৎস্য অফিস ও নৌপুলিশ কমপক্ষে সাড়ে নয় লক্ষ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করে ধ্বংস করেছে। এছাড়াও ট্রলার জব্দ,। তাছাড়া ১৮ জন জেলে আটক করে তাদের বিভিন্ন মেয়াদে করাদন্ড, জরিমানা বা উভয় দন্ডও দেওয়া হয়েছে। আর উদ্ধারকৃত মাছ নিকটস্থ এতিম খানায় দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয়দের সাথে আলাপ করে জানা যায়, নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পদ্মার পাড়েই মাছের হাট বসে। পদ্মা নদীর ৫/৭টি স্থানে প্রতিদিন ভোর থেকে মধ্যে রাত পর্যন্ত বিক্রি হয় ইলিশ মাছ। এই মৌসুমে শিবচরের কাঠালবাড়ি ইউনিয়নের চরচান্দ্রা,চরজানাজাত ইউনিয়নের পদ্মা নদীর বুকে জেগে উঠা হিরাখার ঘাট,মাদবরেরচর ইউনিয়নের পুরাতন কাওড়াকান্দি ফেরী ঘাটের ওপার,একই ইউনিয়নের বড় বাড়ির পিছনে,পুরান কান্দি এলাকায়, বন্দরখোলা ইউনিয়ন কাজিরসুরা বাজার সংলগ্ন নদীর তীরবর্তী এলাকায় গোপনে গড়ে উঠা এসব অস্থায়ী ইলিশের হাট দেদারচ্ছে চলে মাছ বিক্রি।তবে এসকল হাট দ্রুত গুড়িয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

রবিবার (২০ অক্টোবর) বিকেলে থেকে রাত সরেজমিনে উপজেলার মাদবরেরচর ইউনিয়নের পুরান কান্দি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নদীর পাড়ে ইলিশের হাট বসেছে। নদীর পাড়ে একের পর এক ট্রলার এসে ভিড়ছে। ট্রলারে বসেই বিক্রি করছেন জেলেরা। নদীর পাড়েও মাছ নিয়ে সারিবদ্ধভাবে বসেছেন বিক্রেতারা। দরদাম করে মাছ কিনছেন সাধারণ মানুষ। দাম কিছুটা কম। আকার ভেদে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি থেকে শুরু মাছের দাম। বড় মাছগুলোর বেশিরভাগই ডিমে পূর্ণ! ১২/১৩ শত গ্রাম ওজনের ১ টি বাছ বিক্রি হচ্ছে ১২/১৩ শত টাকা দরে। দূরদূরান্ত থেকে সাধারণ মানুষ আসছেন মাছ কিনতে। দাম কম হওয়ায় বেশি পরিমাণ মাছ কিনছেন একেকজন। দরদাম করে ক্রেতারা সুবিধা মতো মাছ কিনতে পারছেন এখানে। এছাড়া চরজানাজাত ইউনিয়নের বিভিন্ন চরে,মাদবরেরচর ও কাঠালবাড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় মাছ বিক্রি চলছে।

এদিকে প্রশাসনের জোরালো অভিযান চলমান থাকলেও পদ্মার পাড়ে বিগত বছরগুলোর মতো এ বছরও বসেছে ইলিশের হাট! একশ্রেণির অসাধু জেলেরা মাছ ধরে এনে নদীর পাড়ে বিক্রি করছেন। মাছ বিক্রির খবর দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পেয়ে ব্যাগ,কার্টুন নিয়ে নারী-পুরুষেরা ছুটছেন পদ্মার পাড়ে। তারা বিভিন্ন কৌশলে, স্কুলের ব্যাগে করেও নিয়ে যাচ্ছে মাছ।

এদিকে গতকাল  দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্ব সেনাবাহিনীর একটি দল পদ্মা তীর বর্তী বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন।

রিফাত নামে মাদবরেরচর এলাকার এক স্কুল ছাত্র বলেন,প্রতিদিন এই এলাকায় দিন রাত মাছ ধরে। রাতে ধরা মাছগুলো ভোর থেকে বিক্রি হয়। ফজরের আযানের পরপরই মানুষের সমাগম বাড়তে থাকে এসব হাটে। সকাল ৮/৯ টার মধ্যে সকালের হাট ভেঙে যায়। এরপর দিনে যে মাছ ধরা হয় তা নিয়ে আছরের পর বেচা-কেনা শুরু হয়।

দেলোয়ার হোসেন নামে একজন বলেন,আমার মাদবরেরচর ইউনিয়নের। এই ইউনিয়নের পূরানককন্দি এলাকায় অনেক মাছ বিক্রি হয়।নদী অভিযান চলে।পুলিশ একদিকে আসে আরেকদিকে জেলেরা মাছ ধরে ও বিক্রি করে। ধরা ও বেচাকেনা চলে সারারাত পর্যন্ত। এছাড়াও পদ্মানদীর বিভিন্ন চর এলাকায় রাতেও মাছ পাওয়া যায়। তবে অভিযানের কারণে চরের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে মাছ বিক্রি করেন জেলেরা।

মসিউর রহমান নামে এক যৃবক এসেছে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে। দিনি বলেন তাজা মাছ তাই কিনতে এসেছি। তবে তুলনা মুলক অনেক দাম।

মতিউর নামে এক ব্যক্তি বলেন, নদীতে অভিযান চললেও পদ্মার চর এলাকায় গড়ে উঠা হাটে দ্রুত অভিযান চালানো উচিত। সেনাবাহিনিকে সাথে নিয়ে হাটগুলো বন্ধ করা উচিত। চর এলাকা কিছুটা দুর্গম হলেও সাধারণ ক্রেতারা পায়ে দীর্ঘপথ হেঁটে নদীর পাড়ে গিয়ে মাছ কিনছেন। জেলেরাও প্রকাশ্যে বিক্রি করছেন।

শিবচরের চরজানাজাত নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. হাবিবুল্লাহ বলেন, নিয়মিত আমরা মৎস অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে অভিযান পরিচালনা করছি।পদ্মার পাড়ে মাছের হাট নিয়ে ইউএনও মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। খুব শীঘ্রই অভিযান চালানো হবে।

এদিকে আজ দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন, উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভুমি) আবদুল মালেক ও উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ফেরদৌসসহ সেনাবাহিনী ও শিবচর থানা পুলিশের একটি দল বন্দরখোলা ইউনিয়নের কাজিরসুরাসহ কয়েকটি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন।

শিবচর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ফেরদৌস ইবনে রহিম বলেন, আমরা গতকাল দুপুর থেকে যৌথ অভিযান পরিচালনা করেছি হাটগুলো ভাঙতে। দূর্গম এলাকায় অনেকেই মাছ কিনছে খবর পাচ্ছি। সেখানেও যাচ্ছি।

তিনি আরো বলেন, শিবচর উপজেলায় মোট জেলে সংখ্যা ২৬ শত ৫৯।এদের মধ্য পদ্মা নদীর তীরবর্তী ৫ টি ইউনিয়নে মোট ১৪৯৪ জন জেলে রয়েছে। গত কয়েকদিন আগে সরকারি বরাদ্দ কম থাকার প্রায় ১৪ শত জেলেকে ২৫ কেজি করে চালও দেওয়া হয়।

শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, পদ্মায় উপজেলা প্রশাসন, মৎস্য অফিস, নৌপুলিশের অভিযান চলমান রয়েছে। জেলে আটকসহ বিপুল পরিমাণ কারেন্টজাল জব্দ হচ্ছে প্রতিদিন। এরপরও এক শ্রেণির অসাধু জেলেরা নদীর পাড়ে মাছ বিক্রির হাট বসিয়েছেন বলে জানতে পেরেছি।গতকাল  দুপুর থেকে আমাদের এসিল্যান্ডকে সঙ্গে নিয়ে সেনাবাহিনি ও পুলিশের সহযোগিতায় কয়েকটি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করি। মাছ ধরা বন্ধে অভিযান, প্রচারসবই হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2022
Don`t copy text!