ডেস্ক রিপোর্ট
বিশ্বের উন্নত দেশের জনগণ বিপদে-আপদে পুলিশকে পরম বন্ধু হিসাবে দেখে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের পুলিশও যে জনগণের জানমালের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে থাকে সেই প্রত্যয়ে তিনি জনসাধারণের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।যদিও স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশের পুলিশ কতটা জনগণের আস্থা অর্জন করতে পেরেছে এ নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। কিছু কিছু পুলিশ কর্মকর্তার অপকর্মের কারণে এই বাহিনীর ভাবমূর্তি মাঝে-মধ্যে ক্ষুণ্ণও হচ্ছে। তবে পুলিশের এমনও কিছু কর্মকর্তা রয়েছেন যারা নিজের সুবিধার কথা চিন্তা না করে অসহায় জনগণের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন। দেশ ও জনগণের জন্য নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জনসাধারণের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। এমনই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মিরাজ হোসেন। ইতোমধ্যেই নিজের ব্যক্তিগত নানা উদ্যোগে তিনি জনগণের আস্থা ও ভালবাসায় সিক্ত হয়েছেন।হয়েছেন ৬ বার জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি।
জনগণের একজন সেবক হিসাবে পরিচয় দেন তিনি। এভাবেই অতি সাধারণ বেশে জনগণের পাশে থাকার চেষ্টা করেন পুলিশের এই কর্মকর্তা। এমনকি নিজের রুম ছেড়ে বাইরে থানার পাশে বসে সবার সঙ্গে কথা বলেন তিনি। যে কোনো সময় সাধারণ মানুষ তার সঙ্গে সরাসরি দেখা করে যে কোনো বিষয়ে কথা বলে সমস্যার সমাধান নিয়ে থাকেন।
জানা যায়, মিরাজ হোসেন ২০২০ সালের ৩ ডিসেম্বর শিবচর থানায় যোগদান করেন। যোগদানের পরপরই তিনি জনস্বার্থ ও মানবিক সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি কাজ করেছেন। যা ইতোমধ্যেই স্থানীয় জনগণের কাছে প্রশংসিত হয়েছে। বর্তমানে তিনি এলাকার সকল শ্রেণির মানুষের কাছে অতি পরিচিত একজন মানুষ। ১৯৮৯ সাল থেকেই পুলিশ বিভাগে চাকরি জীবনে উজ্জ্বল সফলতা ও সততার সঙ্গে কাজ করে আসছেন তিনি।
শিবচর থানায় যোগদানের পর থেকে নিজ যোগ্যতা আর দক্ষতার বলে শিবচরের সচেতন ও সাধারণ এলাকাবাসীর মন জয় করেছেন। সেই সাথে একজন সফল ওসি হিসেবে যত গুণাবলী প্রয়োজন তা তিনি দেখাতে সক্ষম হয়েছেন। থানায় যোগদানের পর থেকে থানা এলাকা থেকে টাউট-বাটপার ও দালালদের দৌরাত্ম বন্ধ হয়েছে। পুলিশী সেবা গ্রহীতাদের এখন আর দূর্ভোগ পোহাতে হয় না। মাদক, সন্ত্রাস এবং দেশি বিদেশি অস্ত্র উদ্ধার অভিযানেও সফল হয়েছেন তিনি। ওসি সার্বিককে সর্বাত্তক সহয়তা করে যাচ্ছেন ওসি (তদন্ত) আমির হোসেন সেরনিয়াবাত ও সেকেন্ড অফিসার রবিউল ইসলামসহ থানার অন্যান্ন অফিসার ও পুলিশ সদস্যরা।
যোগদানের পরপরই শিবচর থানাকে দালালমুক্ত ও মাদকমুক্ত থানা হিসেবে ঘোষণা দেন মিরাজ হোসেন । এরই মধ্যে সর্বোচ্চ মাদকের মামলা দিয়ে মাদক কারবারি ও সেবনকারীদের মনে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছেন তিনি। এমনকি অভিযানে অপরাধীদের গ্রেপ্তারে তিনি নিজেই নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন।
তার ব্যতিক্রমী আরও উদ্যোগ হলো- থানায় মামলার সংখ্যা কমিয়ে আনা, ছোট ছোট অপরাধ স্থানীয়ভাবে নিষ্পত্তি, শিবচর উপজেলার মধ্য একটি ফেরি ঘাট, একটি পৌরসভা ও ১৯ টি ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে কমিউনিটি পুলিশিং সভা, বিট পুলিশিং সভা, সন্ত্রাস ও মাদকবিরোধী সভা, আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে প্রত্যন্ত এলাকায় পাহারা জোরদার, স্কুল-কলেজে স্টুডেন্ট কমিউনিটি সভা, প্রতি শুক্রবার জুমা নামাজের পূর্বে মসজিদের মুসুল্লীদের সাথে আলাপ আলোচনা, ইভটিজিং ও বাল্যবিবাহ বন্ধসহ নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে সমাবেশ। কোনো মহল থেকে প্রভাবিত না হয়েই ন্যায়সঙ্গত কাজ করেই ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তিনি।
গত বছর ও চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে প্রায় প্রতিটি সভা তার পরিচালনায় হয়েছে। এসব জনসভায় বক্তব্যকালে ওসি মিরাজ হোসেন বলেন, ‘মুজিববর্ষের অঙ্গীকার পুলিশ হবে জনতার’- এই স্লোগানে তিনি জনগণের খুব কাছাকাছি যেতে চান। জাতির জনকের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সকলে মিলে কাজ করে দেশকে সোনার বাংলা গড়ার দৃঢ় প্রত্যয়ী তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় শিবচর থানাকে একটি সুসজ্জিত, সু-শৃঙ্খল ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলাই লক্ষ্য তার।
এ ব্যাপারে শিবচর থানার অফিসার ইনচার্জ মিরাজ হোসেন বলেন, ‘আমি এই থানায় কর্মরত থাকা অবস্থায় কোনো সন্ত্রাস ও মাদক থাকতে পারবে না। মাদকের সঙ্গে জীবনে কখনো আপস করিনি, আর করব না। তবে মাদক পুরোপুরি নির্মূল করতে সাংবাদিকসহ সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।’
পুলিশ জনগণের সেবক ও বন্ধু উল্লেখ করে তিনি বলেন, সমাজ থেকে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদসহ সকল অপকর্ম দূর করতে আমাদের সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। এরই মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বাস্তব রূপ পাবে।
লেখক,রফিকুল ইসলাম রাজা,সাংবাদিক, শিবচর,মাদারীপুর।
Editor In Chief : Md.Rafiqul Islam Raza
Sub-Editor : Abu Saleh Mussa
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply