শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি:
মাদারীপুরের শিবচরে ৩ মাসের শিশু সন্তানকে নদীতে ফেলে হত্যা করেছে মা। পুলিশ ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে। অভিযুক্ত মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। তবে অভিযুক্ত ওই নারী মানসিক ভারসাম্যহীন বলে পুলিশ ও পরিবার দাবী করেছে।
পুলিশ জানায়, জেলার শিবচর পৌরসভার চক বাজার জামে মসজিদের মোয়াজ্জিন রফিকুল ইসলাম স্ত্রী ও তিন মেয়েসহ পৌরসভার ডিসি রোড এলাকার হাজী আব্দুর রশিদ মোল্লার বাড়িতে ভাড়া বাসায় বসবাস করেন। মঙ্গলবার দুপুরে রফিকুল ইসলামের স্ত্রী রহিমা আক্তার তার ৩ মাস বয়সী শিশু কন্যা মারিয়াকে কোলে নিয়ে বাসা থেকে বাজারের উদ্দেশ্যে বের হয়। প্রায় এক ঘন্টা পর রহিমা আক্তার শিশুটিকে ছাড়া একা বাসায় আসে। এসময় বাসার লোকজন মারিয়ার কথা জিজ্ঞেস করলে রহিমা অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। এসময় সে প্রথমে জানায় বাজারে যাওয়ার পথে রাস্তার মাঝে কেউ তাকে অচেতন করে মারিয়াকে চুরি করে নিয়ে গেছে। আবার বলে তাকে কেউ শিবচর উপশহর এলাকায় ফেলে রেখেছিল। সেখান থেকে অনেক কষ্টে বাড়ি ফিরেছে। এমন করে বিভিন্ন অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছিল রহিমা। খবর পেয়ে শিবচর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে পুলিশের একাধিক টিম শিশুটি উদ্ধারে কাজ শুরু করে। তদন্তের এক পর্যায়ে পুলিশ শিশুটির মা রহিমা আক্তারকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে রহিমা আক্তার জানায় শিশুটিকে সে উপশহর সংলগ্ন ময়নাকাটা নদীতে ফেলে দিয়েছে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে রাত আনুমানিক সাড়ে ৮ টার দিক নদী থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে। পুলিশের ধারনা মানসিক ভারসাম্যহীনতার কারনে রহিমা আক্তার নিজ সন্তানকে নদীতে ফেলে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
শিশুটির বাবা মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার স্ত্রী প্রায় দুই মাস যাবত মানসিকভাবে একটু অসুস্থ্য। আজ আমাদের শিশু কন্যা মারিয়াকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হলেও পরে সে একা বাড়িতে ফিরে এসেছে। মারিয়ার কথা জানতে চাইলে সে জানায় রাস্তার মাঝে কেউ তাকে চেতনানাশক নিয়ে শিশুটিকে চুরি করে নিয়ে গেছে। সে একেক সময়ে একেক রকম কথা বলছে। তার কোন কথার সাথে কোন কথার মিল খুঁজে পাচ্ছি না। আমি আমার মেয়েকে ফেরত চাই।
মাদারীপুর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (শিবচর সার্কেল) মোঃ সালাউদ্দিন কাদের বলেন, তদন্তের এক পর্যায়ে শিশুটির মাকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করি। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে জানায় শিশুটিকে উপশহর সংলগ্ন নদীতে নিজেই ফেলে দিয়েছে। পরে আমরা নদী থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করি। লাশটির সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরন করা হবে এবং পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।