শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
ঘূর্নিঝড় মিগজাউমের পর থেকে হঠাৎ করেই জেঁকে বসেছে শীত।দিনের বেলা মাঝারি ধরনের শীত অনুভূতি হলেও রাতে লেপ কম্বল ছাড়া ঘুমানো যাচ্ছে না।তাই শীত নিবারনের জন্য শিবচর উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে অস্থায়ী দোকানে,ভ্যানে করে শীতের পোশাক বেচাকেনা ভালোভাবেই শুরু হয়েছে। তবে অন্যান্য জিনিসের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে পোশাকের দামও। নতুন কাপড়ের এতই দাম যা নিম্ন আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে। ফলে শীত নিবারণের জন্য এই মানুষগুলো কম মূল্যের কাপড় কেনার জন্য বাজারে ছুটছেন। কাপড় হাট ব্যবসায়ীরা শীতের কাপড় ওঠাতে শুরু করেছে। বিক্রিও হচ্ছে ভালো।বেচাকেনায় জমে উঠেছে কাপড় হাটে।প্রতিদিন বিকেলে থেকে রাত ৯/১০ টা পর্যন্ত চলছে জমজমাট বেচাকেনা। মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের ক্রেতারা এসব দোকান থেকে শীতের কাপড় কিনতে ভিড় করছেন।
শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) শিবচর পৌর বাজারের প্রধান সড়ক, একাত্তর সড়ক ও লালন মঞ্চের সামনে অস্থায়ীভাবে বসা দোকানগুলো ক্রেতাদের ভিড়ে সরগরম হয়ে উঠেছে। সবাই যেন মনের আনন্দে কিনছে পছন্দের শীতের পোশাক।
দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, শীতের নানা ধরনের পোশাক মিলছে এসব দোকানে। এরমধ্যে রয়েছে- বিভিন্ন ধরনের কোট, হুডি, সোয়েটার, ব্লেজার, ক্যাপ, মাফলার, মোজা, জুতা এবং কম্বল।শুধু তাই নয় এসব দোকানে স্বল্পমূল্যে পাওয়া যাচ্ছে সোয়েটার, জ্যাকেট, মাফলার, কোর্ট, প্যান্ট, কান টুপিসহ বিভিন্ন প্রকার শীতবস্ত্র। এ জন্য দোকানিরা কম মূল্যের কাপড়ের পসরা বসিয়েছে ফুটপাতে। ফুটপাতের দোকানগুলোতে কম মূল্যের শীতের কাপড় পাওয়ায় বেচাকেনা বেশি হচ্ছে। এখানে ২০টাকা থেকে শুরু করে ২শ টাকায় মিলছে গরম কাপড়। এসব দোকানে ব্যবসা জমে ওঠায় এ ব্যবসাকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীরা একদিকে ক্রেতারা যেমন লাভবান হচ্ছে অন্যদিকে তারা সংসারেও সচ্ছলতা আনছে।
বাজারের মেইন রোডে হাজি সিকিম খান সুপার মার্কেটের সামনে ভ্যানে করে মাল বিক্রি করছেন মোস্তফা মিয়া।তিনি জানান,কয়েক বছর ধরে এভাইবে মাল বিক্রি করেন তিনি।বাজারে একটি দোকান নিতে এ্যাডভান্স দিতে হবে, ভাড়া দিতে হয়।তার থেকে এভাবেই বিক্রি করলে তুলনামূলকভাবে আয় হয়।তবে গতবারের চেয়ে এবারের বিক্রি কম।দাম বেশি বলে জানান তিনি।’
দিপু নামে আরেক দোকানদার বলেন, আমার ভাই এই ব্যবসা করে।আমি তাকে একটু সাহায্য করি।বেচা কেনা মুটামুটি।
খলিল মিয়া নামে এক বিক্রেতা বলেন, “এখন শীতের কাপড়ের চাহিদা অনেক, বিক্রিও ভালো। মার্কেটের থেকে আমরা কম টাকায় কাপড় বিক্রি করি, এতে মোটামুটি ভালোই আছি ”
নাজমুল হোসেন নামে এক ক্রেতা বলেন, “এখানে মাঝে মাঝে ভালো কাপড় পাওয়া যায়। দাম বেশি এবং এখানে অনেক পণ্য রয়েছে। তাই যে কেউ তার পছন্দের পণ্য বেছে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। আমি এখানে গরম কাপড় কিনতে এসেছি।”
শিবচরের নলগোড়া এলাকার বাসিন্দা কাজল রায় বলেন, “এখানে কেনাকাটার সুবিধা হলো আপনি দর কষাকষির মাধ্যমে কেনা যায়।তাছাড়া আমরা নিন্ম আয়ের লোক।আমাদের বাজেট অনুযায়ী কিনতে পারছি। তুলনামূলক কম দামে গরম কাপড় পাওয়া যায়।গতবারের চেয়ে এবার সব কিছুর দাম বেশি। ”
শাহিন বিন আনিস নামে এক ক্রেতা জানান, প্রতি বছর শীতের সময় এই দোকানগুলো দেখা যায়।এখানে অনেক মালামাল কম দামে পাওয়া যায়।তাই পৌর এলাকার বাহিরের অনেক ক্রেতাকে দেখি এখান থেকে কাপড় চোপড় কিনতে। শীতের তীব্রতা বাড়লে ক্রেতাও বাড়ে।’
শিবচর বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল হক মুন্সী বলেন, ‘ শিবচর একটি আধুনিক শহর।এখানে ব্যবসায়ীরা খুব সাচ্ছন্দ্য ব্যবসা করছেন। পৌর বাজারে শীতের সময় দেখা যায় বেশ কয়েকজন ভ্রাম্যমান মৌসুমি ব্যবসায়ী শীতের পোশাক বিক্রি করেন। ফুটপাতে কাউকে কোনো চাঁদাও দিতে হয় না। স্থানীয় পুলিশও আমাদের সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করে যাচ্ছে।’