শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধিঃ
মাদারীপুরের শিবচরে এক স্কুলশিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী যৌন হয়রানি অভিযোগ পাওয়া গেছে ।এবিষয়ে শিবচর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ওই শিক্ষকের নাম মো: সুমন মিয়া শিকদার।সে শিবচরের বাঁশকান্দি ইউনিয়নের বাজিতপুর হাজেরা খাতুন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ( ৩০ নভেম্বর) ওই স্কুল ছাত্রী, ছাত্রীর বাবা এবং শিক্ষকদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
জানা যায়, গত ২৩ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) বিকালে স্কুল সংলগ্ন একটি কোচিং সেন্টারে শিক্ষক সুমন মিয়া শিকদারের কাছে প্রাইভেট পড়তে যায় ওই স্কুলের এক ছাত্রী। সে সময় তার অন্য সহপাঠীরা প্রাইভেটে আসেনি। ওই শিক্ষক তাকে একা পেয়ে ছাত্রীর গায়ে হাত দেয়া, কুপ্রস্তাবসহ নানাভাবে যৌন হয়রানির চেষ্টা করেন সুমন।পরে ওই ছাত্রী অনেক জড়াজড়ির পরে কোচিং সেন্টার থেকে অনেক দৌড়ে বাইরে বেড়িয়ে বাড়ি চলে আসে। পরে শিক্ষার্থী পরিবারকে জানালে তারা স্কুলের প্রধান শিক্ষক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।পরে শিবচর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
বাজিতপুর হাজেরা খাতুন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল বাসার মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন বুধবার দুপুরে জানিয়েছেন, ঘটনাটির স্থান ও স্কুল টাইমের বাইরে ঘটেছে। অভিযোগ পেয়েছি ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকদের নিয়ে সভা করে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। তদন্তে ওই শিক্ষক যদি দোষী প্রমাণিত হয় তবে প্রতিষ্ঠানিকভাবে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
স্কুল ছাত্রীর বাবা জানায়, তার মেয়ে বাজিতপুর হাজেরা খাতুন উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ে। গত ২৩ নভেম্বর (বুধবার) সকালে সে অন্য দিনের মতোই স্কুলে যায়। স্কুল শেষে সুমন শিকদার স্যারের কাছে প্রাইভেট পরতে যায়। পরে কাঁদতে কাঁদতে বাড়িতে ফিরে জানায়, শিক্ষক তার সঙ্গে খারাপ কাজ করার চেষ্টা করেন। পরে পুরো ঘটনা খুলে বলে। তার পর আমি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিত অভিযোগ করি। পরে শিবচর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, প্রাইভেট পড়ার সময় শিক্ষক সুমন শিকদার তাকে কুপ্রস্তাবসহ জোরপূর্বক তার শরীরের স্পর্শকাতর স্থানগুলোতে হাত দিতে থাকে। এ সময় সে প্রতিবাদ করে কোচিং সেন্টার থেকে অনেক কষ্টে দৌড়ে বাইরে বেড়িয়ে আসে। সে ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে।
এক ছাত্রীর অভিভাবক বলেন, আমরা ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার জন্য স্কুলে পাঠিয়ে নিরাপদ মনে করি। কিন্তু শিক্ষক সুমন শিকদারের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে হতবাক ও লজ্জিত। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ওই সহকারী শিক্ষক সুমন শিকদারের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের জন্য ফোন করলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার খন্দকার মোঃ মাকসুদুর রহমান বলেন, স্কুলের প্রধান শিক্ষক আমাকে অবগত করেছেন। এসব ঘটনা কোন ভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। তদন্ত সাপেক্ষে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত গোলদার জানান, সুমন শিকদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।