শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি:
ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে হাইওয়ের রেলিংয়ে ধাক্কা লেগে অ্যাম্বুলেন্সে আগুন ধরে ঘটনাস্থলেই নিহত সাত যাত্রীর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।নিহতরা সবাই ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের ফেলাননগর গ্রামে। তারা সবাই একই পরিবারের সদস্য।
নিহতরা হলেন, উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের ফেলাননগর গ্রামের প্রবাসী আজিজার রহমানের স্ত্রী তাছলিমা বেগম (৫৫), তার মেয়ে কমলা পারভিন (২৬), বিউটি বেগম(২৪), নাতি হাসিব(৮), হাফসা(২), আরিফ (১২) ও মেহেদি (১২)। এর মধ্যে কমলা বেগম ঢাকায় বসবাস করতেন। ছোট মেয়ে বিউটি বেগম উপজেলার শেখর ইউনিয়নের মাইটকুমরা গ্রামের মাহমুদ ইসলাম রনির স্ত্রী।
এ ঘটনায় আহত চালক হলেন মৃদুল মালো (২৫)।তিনি ফরিদপুর শহরের গুহলক্ষ্মীপুর এলাকার তকি মোল্যা সড়কের সুভাষ চন্দ্র মালোর ছেলে। তাকে ফরিদপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তার শরীরের বেশি অংশ পুড়ে যাওয়ায় দুপুরো তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে রেফার্ড করা হয়েছে।
শিবচর হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক আব্দুল্লাহ হেল বাকী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, নিহতদের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাদের সকলের বাড়ি ফরিদপুর জেলায়।তারা ঢাকা থেকে ফরিদপুরে গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন। একই পরিবারের সদস্য সবাই।
শনিবার (২৪ জুন) বেলা ১১ টার দিকে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তাছলিমা বেগম হৃদরোগে আক্রান্ত হলে এক মাস আগে ঢাকায় নিয়ে যান স্বজনরা। চিকিৎসা শেষে বড় মেয়ে কমলা বেগমের বাসায় ছিলেন তিনি। আজ সকালে তাছলিমা বেগম তার দুই মেয়ে, নাতি-নাতনি নিয়ে ঢাকা থেকে বোয়ালমারী গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন।পথি মধ্যে ভাঙ্গা উপজেলার মালিগ্রামে দুর্ঘটনায় নিহত হন তারা।
ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের অফিসার ইনচার্জ বলেন, সকাল ১০ টা ৫৫ মিনিট আমরা খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে আসি।ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা দ্রুতগামী একটি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফ্লাইওভারের রেলিংয়ে ধাক্কা লেগে মুহূর্তেই আগুন ধরে যায়। এ সময় গাড়িটি জ্বলছিল।ধারনা করা হচ্ছে সামনের টায়ারও ব্লাষ্ট হইছে, ভিতরের সিলিন্ডারও বিস্ফোরন হয়েছে।আমরা তদন্ত ছাড়া সঠিক কারন বলতে পারবো না। ভেতরেই নারী-শিশুসহ সাতজন মারা গেছে।আমরা মরদেহগুলো উদ্ধার করেছি।
প্রত্যক্ষদর্শী মো. মিন্টু বলেন, আমরা ওই সময় ব্রীজের নিচে ছিলাম। এক্সপ্রেসওয়ের ব্রিজে ওঠার আগেই গাড়িটির চাকা ব্লাস্ট হয়ে যায়। এ সময় গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ব্রিজের রেলিংয়ে ধাক্কা লেগে ঘুরে যায়। এরপরই আগুণ ধরে। চালক সামনের ভাঙা দরজা দিয়ে বের হয়ে আসেন। কিন্তু অন্যরা ভেতরে আটকা পড়ে। মুহূর্তেই পুরো গাড়ি পুড়ে যায়।গাড়ির কাছে আগুনের তাপে যাওয়া যায়নি।
হাইওয়ে পুলিশের ফরিদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার মাহবুব আলম বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে অ্যাম্বুলেন্সটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কের ডিভাইডারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে আগুন ধরে যায়। চালকের পাশের জানালাটি খোলা ছিল। এছাড়া সব জানালা আটকানো ছিল। চালক রক্তাক্ত অবস্থায় বের হয়ে এলে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। অন্যরা কেউ বের হতে পারেনি।
Leave a Reply