শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধিঃ
কয়েকদিন ধরে টানা শীতের কিছুটা কমে রাতে হালকা গরম অনুভূতি। ভোর রাত থেকে শীতের পাশাপাশি কুয়াশাছন্ন সকাল এরপর মেঘের ফাঁক গলে বেড়িয়ে আসে রোদ! তবে সকাল গড়িয়ে দুপুর আসতে না আসতেই আকাশে রোদে ঝলমলে হাতছানি। দুপুর ১২ টার দিকে মেঘের ফাঁদে আটকে পরে রোদ। কমতে থাকে তাপমাত্রা।
শিবচর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুপুর সাড়ে ১২ টা থেকে জেলার সর্বত্র মেঘাচ্ছন্ন আকাশ। ১ টা থেকে জেলার প্রায় এলাকায় হঠাৎ শুরু হয়েছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। বৃষ্টির সাথে বাতাস বইতে থাকায় অনেকটা ঝড়ো পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এদিকে বৃষ্টির সাথে পড়তেছিলো শিলা।অন্যদিকে কনকনে ঠাণ্ডা আর বৃষ্টিতে তাই ব্যাহত হয়েছে এখানকার জীবনযাত্রা। থেমে থেমে মেঘের গর্জন বর্ষার আমেজ নিয়ে আসে প্রকৃতিতে। বৃষ্টির কারণে বেড়েছে শীতের প্রকোপ। কয়েক ঘণ্টা টানা বৃষ্টির কারণে শ্রমজীবী মানুষ কাজে যেতে পারেনি। বিশেষ করে দিনমজুর, মিস্ত্রি ও নির্মাণ শ্রমিকরা ঘর থেকে বের হতে পারেননি। রাস্তাঘাটে যানবাহন ও লোক চলাচল ছিল কম। বিপাকে পড়েছে দৈনিক আয়ের ওপর নির্ভরশীল রিকশা ও ভ্যানচালকসহ নিম্ন আয়ের মানুষেরা।
শিবচর উপজেলার কাঠালবাড়ি ইউনিয়ন কয়েকজন চাষীরা জানিয়েছেন,’মাঘের এই বৃষ্টিতে নিচু ফসলি জমিতে পানি আটকে থাকলে রসুন,পিয়াঁজসহ অন্যান্য ফসলের ক্ষতি হবার সম্ভবনা রয়েছে। তবে সব্জি ক্ষেতসহ কিছু কিছু ফসলের জন্য এই বৃষ্টি উপকারী।
এদিকে ঝড়ো বাতাস ও বৃষ্টির কারণে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা। ঝড়ো বাতাসের কারণে নৌরুটে বন্ধ রাখা হয় লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল। বাতাস ও বৃষ্টির কারণে শীত অনুভূত হওয়ায় যাত্রীরা দূর্ভোগে রয়েছেন। বিশেষ করে বয়স্ক ও শিশু যাত্রীদের নিয়ে ঘাটে টার্মিনালে অপেক্ষা করতে হচ্ছে অন্যদের।
বাংলাবাজার ঘাট সূত্র জানায়, বৃষ্টির সময় মাঝে মাঝেই বজ্রপাত হতে থাকে। দুপুর ১ টায় শুরু হওয়া বৃষ্টির সাথে থেমে থেমে বজ্রপাত হচ্ছে। এছাড়া বাতাসও বইছে। শীত মৌসুমে বৃষ্টির সাথে বাতাস থাকায় শীত বেশি অনুভূব হচ্ছে।’
এদিকে বৃষ্টির কারনে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের বাংলাবাজার ঘাট সংলগ্ন নান্দুমোল্লার কান্দি এলাকায় আন্ডারপাশে অবস্থানকালে যাত্রীদের সাথে আলাপ করলে তারা জানান,’বৃষ্টি ও বাতাসের কবলে পড়ে প্রায় ১ঘন্টা ধরে সড়কের নিচে অবস্থান নিয়েছি। বৃষ্টি থামছে না। প্রচন্ড শীত পরেছে।’
বাবু মোল্ল্যার কান্দি গ্রামের আবদুর রহমান নামের এক ইজিবাইক চালক বলেন,’বৃষ্টির কারণে ভীষন শীত পরেছে। গাড়ি গ্যারেজে রেখে বাড়ি যাবো। বাতাসের কারণে শীত বেশি। সড়কে থাকা যাচ্ছে না!’
বাবু মোল্লার কান্দি গ্রামে চায়ের দোকানে বসে থাকা স্থানীয় মোল্লার বাজার এলাকার ভ্যান দেলোয়ার বলেন, ‘মাঘের মাঝামাঝি বৃষ্টির কারণে রাস্তায় ভ্যান চালানো যাচ্ছে না। যাত্রীও নেই। দুপুর থেকে বসে আছি। রাস্তায় কোনো মানুষের দেখা নেই।’
শিবচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাকির অনুপম রায় বলেন, কৃষকদের এই বৈরী আবহাওয়া সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে।খোজ নিতে হবে যেন বৃষ্টির পানিতে ক্ষতি হয় এমন ফসলের ক্ষেতে যেন পানি না জমে থাকে।