মাদারীপুর প্রতিনিধি:
মাদারীপুরের ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে শেষ মূহুর্তে সবখানেই জমে উঠেছে গবাদিপশুর হাট।হাটে বাজারে হাজার হাজার পশু উঠলেও বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে মানুষের আর্থিক সামর্থ্য কমায় বাজেট কমিয়ে মাঝারি আকারের দেশি গরুই রয়েছে পছন্দের শীর্ষে
শুক্রবার ও শনিবার (১৫ জুন) উপজেলার শেখপুর হাট,উপশহর বাজার,কুতুবপুর হাটসহ কয়েকটি হাট ঘুরে গবাদিপশুর বিকিকিনির এমন বাজার পরিস্থিতি দেখা যায়।বাজারে প্রচুর পশু থাকলেও ক্রেতাদের চাহিদা মাঝারি পশু।তবে এসব হাটে বাজারে সীমান্ত পেরিয়ে আসা কিংবা ফিড খেয়ে মোটাতাজা নয়, কৃষকের গোয়াল ঘরে লালন-পালন হওয়া এমন দেশিয় মাঝারি আকারের গরুগুলো এসেছে।
প্রান্তিকের সাধারণ কৃষক ও খামারিরা বলছেন, সব ধরনের পশুখাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় লালন-পালনে খরচ বেড়েছে। এখন হাটের পরিস্থিতি ভালো। শেষের দিকে যদি সীমান্ত দিয়ে গরু প্রবেশ করে তাহলে দাম কমে যাবে। এজন্য সীমান্তে নজরদারি দাবি করেছেন তারা।
শেখপুর হাটে গরু নিয়ে এসেছেন বাশকান্দি এলাকায় মজিবর হাওলাদার। তিনি জানান, বেশি দামে নয়, ন্যায্য দাম পেলেই পালিত গরুটি বিক্রি করবেন তিনি।ক্রেতারা ১ লাখ বিশ থেকে ৪০ হাজার পর্যন্ত দাম করেছে।তবে তিনি দেড় লাখ হলে বিক্রি করবেন বলে জানান।
এই হাটে প্রায় বিশটি গরু এনেছেন বাশকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম রিপন।তিনি বলেন,আমার গরুগুলো আমার খামারের লালিত পালিত।গরুগুলো অনেক বড় সাইজের আড়াই লাখ টাকার নিচে আমার খামারে কোন গরু নেই।আমার খামারের সব গরুগুলো দেশী ঘাস ও খাবার খাইয়েয় লালিত পালিত।
শেখ পুর হাটে গরু কিনতে শিবচর পৌর এলাকায় থেকে এসেছেন সোহাগ খান।তিনি জানান,শিবচর পৌরবাজারসহ কয়েকটি হাটে গরু দেখেছি।তবে এই হাটে গরুর দাম তুলনামুলক কম।আমরা দেড় লাখ টাকা দিয়ে একটি গরু কিনেছি।
বাশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান খোকনের ভাই রিপন জানান,আমরা তিনটি গরু কোরবানি করার জন্য কিনেছি।তিনটি গরু চমৎকার ও দেশী লোকের বাড়িতে লালন করা গরু।তিনটির দাম মোট ৭ লাখ টাকা।
শিবচর উপশহর হাটে গরু কিনতে আসা এনামূল হক নামের এক ক্রেতা জানান, এবার মানুষের অর্থনৈতিক সামর্থ্য কম। সে কারণে মাঝারি জাতের গরু পছন্দ। এসব গরুর মাংস খেতেও মজা।
জেলা প্রানী সম্পদ অফিসারের কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে মাদারীপুরের পাঁচটি উপজেলায় প্রাকৃতিক উপায়ে গরু মোটাতাজা করা এখন শেষ পর্যায়ে। এ বছর বিভিন্ন খামারে প্রায় ৩৬ হাজার গরু, ১৬৫টি মহিষ, ২৪৬ টি ভেড়া এবং ৩৮ লাখের মত ছাগল কোরবানীর জন্য প্রস্তুত রয়েছে। জেলার চাহিদার চেয়ে বেশি পশু উদ্বৃত্ত রয়েছে। খামারিরা বড় বড় গরু রাজধানী ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছে।
এছাড়াও মাদারীপুরে এবারের কোরবানীর জন্য ৮ হাজার ৬৯৭ টি খামারে ৩৬ হাজার ৫৯২ টি গরু এবং ৩৮ হাজার ৭৬৭ টি ছাগল প্রস্তুত রয়েছে। যেখানে জেলায় ৩৩ হাজার ৫৫০ টি গরু এবং ৩৩ হাজার ২৫০টি ছাগলের চাহিদা থাকলেও জেলা কোরবানীর জন্য এর চেয়ে উদ্বৃত্ত রয়েছে গরু ও ছাগল।
মাদারীপুর জেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুবোধ কুমার দাস বলেন, কোরবানীকে সামনে রেখে জেলার খামারীরা পশু মোটাতাজাকরণ করছে। খামারীরা কোরবানীর পশুকে যাতে ক্ষতিকর কোন কিছু না খাওয়ায় সে বিষয়ে আমাদের সার্বক্ষনিক তদারকি রয়েছে। খামারীদেরকে বিভিন্ন সময়ে আমরা প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়ে থাকি। মাদারীপুর জেলার চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত রয়েছে কোরবানির পশু। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে মাদারীপুরে পালিত দেশীয় জাতের গরুর অন্য জেলাতেও যাবে বিক্রির জন্য এবং দামও পাবে বেশী পাবে।।
Leave a Reply