প্রতিনিধি শিবচরঃ
তীব্র স্রোতের কারনে বাংলাবাজার- শিমুলিয়া নৌরুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় ঘাটে আটকে থাকা পন্যবাহী ট্রাক বিকল্প রুটে ফিরে গেছে। এছাড়াও বাংলাবাজার ঘাটে আসা অ্যাম্বুলেন্স, পিকআপ, ব্যক্তিগত গাড়ি ও মোটরসাইকেল যাত্রীরা অন্যত্র ফিরে যাচ্ছে। ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় এই নৌরুট দিয়ে আসা যাত্রী ও যানবাহন চালকদের দূর্ভোগ বেড়েছে।
বৃহস্পতিবার(১৯ আগস্ট) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বাংলাবাজার ঘাট ঘুরে দেখা গেছে এই চিত্র।এর আগে বুধবার (১৮ আগস্ট) দুপুর আড়াইটা থেকে থেকে বন্ধ রয়েছে ফেরি চলাচল।
বিআইডব্লিউটিসি’র বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাবাজার- শিমুলিয়া নৌরুটে পদ্মাসেতু অতিক্রম করতে গিয়ে প্রবল স্রোতের মুখে পরে ফেরিগুলো। দূর্ঘটনা এড়াতে অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে ফেরিগুলো।এদিকে ঘাটের টার্মিনালে আটকে থাকা পন্যবাহী ট্রাক চালকদের দৌলতদিয়া – পাটুরিয়া রুট ব্যবহারের নির্দেশ দেয়া হলে বুধবার রাতেই ঘাটে আটকে থাকা ট্রাকগুলো বাংলাবাজার ঘাট ত্যাগ করে। এছাড়া ঘাটে আসা অন্যান্য যানবাহনের চালকদের বিকল্প নৌরুট ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।তবে সকালে ঘাটের চারটি টার্মিনালে ৫০ টি গাড়ির মত দেখা গেছে।
এছাড়াও বাংলাবাজার ফেরিঘাট ঘুরে দেখা গেছে,পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে ঘাটের পন্টুনের রাস্তা তলিয়ে গেছে। ফেরিতে উঠার পথে ইট দিয়ে স্বাভাবিক করা হচ্ছে। এছাড়াও প্রতিটি ঘাটেই নোঙর করে রাখা হয়েছে কয়েকটি ফেরি। ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় ঘাটের টার্মিনাল ফাঁকা রয়েছে।তাই ফেরিঘাট এলাকা সুনসান অবস্থা বিরাজ করছে।
এদিকে ফেরি বন্ধের বিষয়টি না জেনেই বৃহস্পতিবার সকালে দক্ষিণ অঞ্চলের বাংলাবাজার ঘাটে আসেন বিভিন্ন জেলার লোকজন । ঘাটে এসে ফেরি বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েন তারা। অনেক ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে এসে ফেরি চলাচল বন্ধ জেনেও ফেরিতে উঠতে
খুলনা থেকে বাংলাবাজার ঘাটে আসা মো. তানভীর নামের এক মোটরসাইকেল আরোহী বলেন,’স্রোতের কারণে রাতে ফেরি বন্ধ থাকে এমনটা জানা ছিল।আগে জানলে এভাবে মোটরসাইকেল একজন মহিলা আরোহীকে নিয়ে এ ঘাটে আসতাম না।জরুরি প্রয়োজনে ঢাকা যেতে হবে। তাই এভাবে একজন নারীকে সাথে নিয়েই বের হয়েছিলাম।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে আসা জুয়েল নামের এক মোটরসাইকে আরোহী বলেন,’সকালে ঘাটে এসে জানলাম ফেরী বন্ধ। তবে আগে জানলে মোটরসাইকেল ছাড়াই রওনা হতেন তিনি।এখন দেখি মোটরসাইকেলটি কারো বাড়ি রেখে যাওয়া যায় কিনা? না হলে বাড়ি ফিরে যেতে হবে।
এদিকে বরিশাল থেকে আসা রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সের চালক সোহেল বলেন,’ফেরি বন্ধ জানা ছিল না।এছাড়াও রোগীর লোকজনও জানতোনা এই ঘাট বন্ধ। এখন রোগী নিয়ে আবার পাটুরিয়া ঘাটে যেতে হবে।
এদিকে ফেরী চলাচল বন্ধ থাকায় লঞ্চে যাত্রীদের চাপ কিছুটা বেড়েছে বলে লঞ্চঘাট সূত্রে জানা গেছে। তবে স্বাভাবিক সময়ের মতোই যাত্রীরা লঞ্চে পার হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঘাটে নোঙর করা ফেরির এক চালক জানান,’বাংলাবাজার থেকে ছেড়ে যাওয়া ফেরি মূল পদ্মায় প্রবেশ করতে গেলে ডুবোচরের কারণে ঘূর্ণিস্রোতের কবলে পড়ে। এতে করে পদ্মাসেতুর পিলারে যেকোন সময় ধাক্কা লাগতে পারে। স্রোতের গতিপ্রকৃতি মূহুর্তেই পরিবর্তন হওয়ায় পদ্মাসেতু অতিক্রম করতে গিয়ে ঝুঁকির মধ্যে পরতে হয়। স্রোত না কমলে ফেরি বন্ধ রাখাই উত্তম।
বিআইডব্লিউটিসি’র বাংলাবাজার ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন আহমেদ জানান,’বুধবার দুপুর আড়াইটা থেকে বন্ধ রয়েছে ফেরি চলাচল । আমরা ঘাটে আসা সকল যানবাহনকে বিকল্প নৌরুট ব্যবহারের জন্য বলে দিচ্ছি।কবে ফেরি চলাচল করতে পারে জানতে চাওয়া হলে তিনি এ ব্যপারে কিছু জানান নি।
Editor In Chief : Md.Rafiqul Islam Raza
Sub-Editor : Abu Saleh Mussa
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply