মাদারীপুর প্রতিনিধি।।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ফেসবুকে পরিচয়ে বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক মারুফের হোসাইনের (৩০) বিরুদ্ধে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক ও পরে নিজ বাসায় ঢেকে নিয়ে হত্যা চেষ্টায় মামলা করলেন মাদারীপুর কলেজ শাখা ছাত্রলীগের উপ-সম্পাদক সাথি মাতুব্বর (২৪)।
বৃহস্পতিবার (২০ মে) রাতে মাদারীপুর সদর মডেল থানায় সাথী মাতুব্বর বাদী হয়ে
মারুফসহ তিনজনকে আসামী কর একটি মামলা করা হয়।মামলার অপর আসমীরা হলেন মারুফের ভাই আরিফ হাওলাদার এবং মা মেহেরুননেছা। মামলা নং ৩৩/২৬০।
মারুফ হোসাইন মাদারীপুরের পেয়ারপুর ইউনিয়নের পূর্বপেয়ারপুর কুমারেরট্যাক ৮নং এলাকার মৃত কাদের হাওলাদারের ছেলে। সে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক।
এছাড়াও সাথি মাতুব্বর কেন্দুয়া বাজিদপুর শ্রীনদী এলাকার মৃত জাফর মাতুব্বরের মেয়ে।সে মাদারীপুর কলেজ শাখা ছাত্রলীগের উপ-সম্পাদক ও ৫ বছরের একটি পুত্র সন্তানের জননী।
মামলার বিবরন সুত্রে জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ফেসবুকে সাথি ও মারুফের পরিচয় হয়। এক বছর আগে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিছুদিন যেতে না যেতে সাথিকে বিয়ের প্রলোভনসহ নানা রকম প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার স্বামীকে তালাক দিতে বাধ্য করে মারুফ।এর পরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মারুফ দিনের পর দিন সাথির সঙ্গে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করেন। পরবর্তীতে সাথী তাকে বিয়ের চাপ দিলে মারুফ তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেন। একপর্যায়ে মারুফ সাথির কাছে বিয়ের শর্ত হিসেবে ১০ লাখ টাকা দাবি করে। সম্পূর্ণ টাকা দিতে ব্যর্থ হলেও মারুফ বিভিন্ন অজুহাতে সাথির কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।
সর্বশেষ গত শনিবার (১৬ মে) সকাল ৭টার দিকে সাথিকে বিয়ে করবে বলে নিজ গ্রামের বাড়িতে ঢেকে নেয় মারুফ। যাওয়ার পর তার সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করতে বলা হয়। কিন্তু বিষয়টি না মানলে নেওয়ায় মারুফ, তার ভাই আরিফ হাওলাদার (২৭) ও তার মা মেহেরুন্নেছা (৫৫) সাথিকে শারীরিক নির্যাতন করে।
মামলার তথ্য মতে আরো জানা যায়, মারুফ ও তার ভাই সাথিকে গলা চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা চালায়। হত্যার পর তারা সাথির লাশ পানির ট্যাংকিতে গুম করে রাখার পরিকল্পনা করে। সাথি তখন তাদের কাছে জীবন ভিক্ষা চান। সাথি যাতে কোনো আইনের আশ্রয় না নিতে পারে এ মর্মে তাদের কাছে ভিডিও বক্তব্য দিতে বলে এবং ৩০০ টাকার স্ট্যাম্প স্বাক্ষর করতে বলে মারুফ। সাথি জীবন বাঁচাতে ভিডিও বক্তব্য দেন এবং স্ট্যাম্প স্বাক্ষর করেন। এ সময় তারা সাথীর সঙ্গে থাকা ২০ হাজার টাকা ও গলার চেন, কানের দুল, হাতের আংটি ও মোবাইল ফোন রেখে দেয়।
এ ব্যাপারে সাথি মাতুব্বর বলেন, মারুফ আমাকে বিয়ের আশ্বাস দিয়েছে, বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়েছে। যার কারণে আমি আমার স্বামীকে তালাক দেই। বিয়ের আশ্বাস দিয়ে তার বাসায় নিয়ে আমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছে। আমি এর বিচার চাই এবং আমি আমার অধিকার চাই।
জানতে চাইলে ছাত্রলীগ নেতা মারুফ হোসেন বলেন, এটা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। সাথী মাতুব্বর এর আগে অনেক ছেলেদের সঙ্গে এমন প্রতারণা করেছে। স্বামী থাকার পরেও সে বিভিন্ন ছেলেদের সঙ্গে পরকীয়া করে। এজন্য তার স্বামী তাকে তালাক দিয়েছে। আমি তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম মিঞা বলেন, এ বিষয়ে আমরা আইনগত পদক্ষেপ নিয়েছি। আসামিকে ধরতে চেষ্টা চলছে।
Leave a Reply